কোভিড টিকার উদ্বৃত্ত ডোজ নিয়ে বিপাকে ভারত

করোনাভাইরাসের টিকার উদ্বৃত্ত ডোজ রফতানি করতে হিমশিম খাচ্ছে ভারত। টিকাদানের হার কম থাকলেও অনেক দেশ অবকাঠামো ও লজিস্টিকস কারণে ভারতে উৎপাদিত টিকা ব্যবহার বিলম্বিত করার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট ও এক সরকারি কর্মকর্তা এই তথ্য জানিয়েছেন। মঙ্গলবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।

সেরাম অ্যাস্ট্রাজেনেকা, নোভাভ্যাক্স ও স্পুটনিক ভি কোভিড টিকা উৎপাদন করছে। এইর মধ্যে তারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদন সাময়িকভাবে অর্ধেক কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। নতুন অর্ডারের আগ পর্যন্ত উৎপাদন বাড়াবে না কোম্পানিটি।

কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়া ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল সম্মেলনে সেরামের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা বলেন, বিশ্বজুড়ে সরবরাহ পর্যন্ত। কিন্তু মানুষকে টিকাদানে কিছুটা সময় লাগবে।

তিনি আরও বলেন, কিছু দেশ তাদের জনসংখ্যার মাত্রা ১০ বা ১৫ শতাংশকে টিকা দিয়েছে। তাদের এই হার ৬০-৭০ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে। ওই দেশগুলোকে চাহিদা বেশি। কিন্তু মাসিক চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়েছে।

একই অনুষ্ঠানে ভারতীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিনোদ কুমার পাল জানান, এখনও টিকা না নেওয়া ৩৬০ কোটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ডোজ রয়েছে। ভারত টিকা দিতে প্রস্তুত। বিতর্ক হওয়া উচিত কীভাবে সরবরাহে দ্রুত গতি, অনেক দেশে টিকাদানের সামর্থ্য বাড়ানো যাবে। বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশে।

গত মাসে আফ্রিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বলেছে, তাদের অনেক দেশ টিকার লজিস্টিকস নিয়ে সমস্যায় পড়েছে। কয়েক মাসের বিলম্বের পর হুট করে সরবরাহ বেড়ে যাওয়াতে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

গত মাসে ভারতে টিকার চাহিদা ছিল প্রায় ২৫ কোটি ২০ লাখ ডোজ। অথচ প্রতিমাসে অনুমোদিত প্রধান তিনটি টিকার ৩৪ কোটি ৫০ লাখ ডোজ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে দেশটির।

 অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড নামে উৎপাদন ও বাজারজাত করছে সেরাম। এপ্রিল থেকে এই টিকার মাসিক উৎপাদন তিনগুণ বেড়ে রয়েছে ২৫ কোটি। ভারতে প্রধানভাবে এই টিকাটি প্রয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু এখন সরকারের কাছ থেকে নতুন কোনও অর্ডার পাচ্ছে না ভারত।

টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর নিম্ন আয়ের দেশে টিকা সরবরাহকারী কোভ্যাক্স উদ্যোগ নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে সেরামের কাছ থেকে ৪ কোটি ডোজ চেয়েছে।

সেরামের কাছ থেকে ৫৫ কোটি ডোজ কোভিশিল্ড কেনার সুযোগ ছিল কোভ্যাক্স উদ্যোগের। কিন্তু এপ্রিলে নিজেদের জনগণকে টিকাদানে গুরুত্ব দিতে টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির পর সেরামের ওপর এককভাবে নির্ভর করছে না বৈশ্বিক উদ্যোগটি। এরপর অনেক টিকা অনুমোদিত হয়েছে।

একই অনুষ্ঠানে কোভ্যাক্স উদ্যোগের পৃষ্ঠপোষক গ্যাভি’র সিইও সেথ বার্কেলি বলেন, কঠিন সময়েও যেন সরবরাহ অব্যাহত থাকে তা ভারতের বিশ্বের ফার্মেসি হয়ে উঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় বিভিন্ন দেশ বিকল্প সরবরাহকারীদের খোঁজ শুরু করবে।