ইউক্রেন ইস্যুতে এবার ভারত-যুক্তরাজ্য সম্পর্কে ফাটলের ইঙ্গিত

ইউক্রেন ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে পশ্চিমাদের দূরত্ব বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে ফাটলের বিষয়টি প্রকাশ্যে এলো। যুক্তরাজ্যের সর্বদলীয় একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সফর একেবারে শেষ মুহূর্তে বাতিল করার পর বিষয়টি সামনে এসেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, ব্রিটিশ প্রতিনিধি দলের এই সফর বাতিল ইউক্রেনে আক্রমণের পর রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের দূরত্ব বজায় রাখতে অস্বীকৃতির কারণে ক্রমবর্ধমান বিরোধের ইঙ্গিত।

জানুয়ারি থেকে ১০ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলের সফর নিয়ে আলোচনা ও পরিকল্পনা হচ্ছিল। সফরকারীদের পরিকল্পনা অনুসারে তাদের দিল্লি ও রাজস্থান সফর করার কথা ছিল। কিন্তু ভারতীয় হাইকমিশন শেষ মুহূর্তে আপত্তি তুলেছে বলে জানা গেছে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গত মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা করেন। বরিস চাইছিলেন নিজের প্রভাব বিস্তার করে ভারত যাতে রাশিয়ার আক্রমণবিরোধী অবস্থান নেয় তা নিশ্চিত করতে। ভারত এখন পর্যন্ত রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও নিষেধাজ্ঞা বা সমালোচনা করেনি।

যুক্তরাজ্যের উচ্চ পর্যায়ের এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন হাউজ অব কমন্সের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হয়লে। সঙ্গে ছিলেন তার ডেপুটি। কমন্সের স্পিকারের এটিই হতে পারতো প্রথম ভারত সফর।

প্রতিনিধি দলটির প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল যুক্তরাজ্য-ভারত মুক্তবাণিজ্যকে বিস্তৃত করতে উৎসাহিত করা। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের কারণে সফরের পটভূমি পাল্টে যায়। ইউক্রেনের প্রতিরোধে সহযোগিতায় ব্রিটেন নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা নিয়েছে।

দ্য গার্ডিয়ান জানায়, প্রতিনিধি দলের কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা ব্রিটিশ এমপিদের ইউক্রেন ইস্যুতে ভারতের অবস্থান চাওয়ার কারণে এই সফর বাতিল করলো দিল্লি তা স্পষ্ট নয়।

মস্কোর সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রুপি-রুবল বিনিময়ের প্রাথমিক আলোচনার খবরে উদ্বিগ্ন ছিল ব্রিটেন। আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থায় রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ভারত যাতে রুশ অস্ত্র আমদানি করতে পারে, এই আলোচনা ছিল তা নিশ্চিত করার জন্য।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের মধ্যে ভারত ব্যতিক্রম। তিনি বলেন, কোয়াড জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ভারতই ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে জোরালো অবস্থান নিতে পারেনি।  

পশ্চিমারা মস্কোকে বাইরের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চাইলেও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে পরিচিত ভারতের তেল শোধনকারীরা মূল্যছাড়ে রাশিয়ান তেল ক্রয় অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান