চব্বিশে আসন বাড়াতে মরিয়া বিজেপি

পশ্চিমবঙ্গে ‘প্রবাসে’ আসছেন একঝাঁক কেন্দ্রীয় নেতা

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি। আর তার জন্যই এক ঝাঁক কেন্দ্রীয় নেতাকে পশ্চিমবঙ্গে এনে দলকে চাঙা করতে উঠে পড়ে লেগেছে গেরুয়া শিবির।

একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের হাতে বিজেপির মর্মান্তিক পরাজয়ের পর গত লোকসভা নির্বাচনে প্রাপ্ত ১৮ আসন ধরে রাখাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ মুরলীধর সেন লেনের কর্তাদের কাছে। বিধানসভা ভোটের হারের পর কর্মী-সমর্থকদের হতাশা আর গোষ্ঠী কোন্দলে বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক ক্ষমতায় মরচে ধরেছে। যার ফল দেখা গেছে সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে। এমন অবস্থায় দলকে ফের চাঙা করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির।

অপরদিকে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে হারিয়ে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপিকে পর্যদুস্ত করতে তাল ঠুকছে শাসকদল তৃণমূল। ইতোমধ্যে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার পছন্দের প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সম্মিলিত বিরোধী দলের প্রার্থী করে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে তৃণমূল বিরোধীদের নেতৃত্ব দেওয়ার অন্যতম দাবিদার। এমতাবস্থায় বাংলায় চব্বিশের লোকসভা ভোটে উনিশে পাওয়া ১৮ আসন ধরে রাখাটাই বিজেপির কাছে সম্মান ধরে রাখার লড়াই।

সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় বিজেপির নির্দেশে লোকসভা ভোটের দু’বছর আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গে হারানো জমি ফিরে পেতে সাংগঠনিকভাবে মাঠে নামতে চলেছেন। আর এজন্য মাঠে নামছেন একঝাঁক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতা-নেত্রীরা। এই তালিকায় রয়েছেন- ভূপিন্দর যাদব, স্মৃতি ইরানি, কিরণ রিজিুজু, ধর্মেন্দ্র প্রধানরা। শুধু ১৮ লোকসভা আসন ধরে রাখা নয়, বাড়তি আরও ১৯ টি আসনকে টার্গেট করেছে বিজেপি। যেগুলোতে বিজেপি সামান্য ব্যবধানে হেরেছিল।

বিজেপি মনে করছে, এই আসনগুলোকে টার্গেট করে পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে পারলে এর মধ্য থেকে বেশ কয়েকটিতে জয় আসতে পারে চব্বিশের লোকসভা ভোটে। উল্লেখযোগ্যভাবে এই আসনগুলোর তালিকায় রয়েছে, তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ড হারবার, দক্ষিণ কলকাতা ও বিজেপি একদা জয় পাওয়া আসন দমদম। এছাড়া যেসব লোকসভা আসন বিজেপির নজর রয়েছে তা হলো, মালদহ দক্ষিণ, কৃষ্ণনগর, জয়নগর, মথুরাপুর, বারাসত, বসিরহাট, কলকাতা উত্তর, উলুবেড়িয়া, হাওড়া টাউন, শ্রীরামপুর, আরামবাগ, কাঁথি, তমলুক, ঘাটাল, বোলপুর ও পূর্ব বর্ধমান।

জানা গেছে, এই লোকসভা আসনগুলোতে গিয়ে রীতিমতো থেকে প্রবাস করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ঘুরে ফিরে প্রত্যেক নেতাই এই কেন্দ্রগুরোতে যাবেন। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠকে মিলিত হবেন। রাজনৈতিক বৈঠক ছাড়াও সংগঠন নিয়ে বৈঠক করবেন তারা। প্রতিটি কেন্দ্রের কাজের অগ্রগতির রির্পোট তারা দেবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটিকে।

সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় নেতারা এখন পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে সংগঠনকে মজবুত করার চেষ্টা চালাবেন যা আসলে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য বুথভিত্তিক সংগঠনকে জোরদার করবে। আগামী ১৫ জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতা-নেত্রীরা বাংলায় ‘প্রবাসে’ আসতে শুরু করবেন।