ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনা

সংসারের হাল ধরতে কেরালা যাচ্ছিলেন হালিম মোল্লা, মাঝপথেই সব শেষ...

ভাগ্যের চাকা বদলাতে কাজের সন্ধান পেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ শহরের বাসিন্দা হালিম মোল্লা। এই সূত্রেই ‘করমণ্ডল এক্সপ্রেসে’ চেপে স্বপ্নের পথে ছুটছিলেন চেন্নাইয়ে। সেখান থেকে যেতেন কেরালায়। কিন্তু সামনেই যে মৃত্যু অপেক্ষা করছে কে জানতো! শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১০-১২টি বগি বালেশ্বরের কাছে লাইনচ্যুত হলে প্রাণ হারাতে হয় তাকে। অথৈয় সাগরে ফেলে গেলেন স্ত্রী ও চার বছরের সন্তানকে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দকে ট্রেন দুর্ঘটনার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন তারই সঙ্গে থাকা আত্মীয় সারোয়ার মোল্লা। তিনি বলেন, ‘ট্রেন দুর্ঘটনার আগমুহূর্তে খাবারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমি ছিলাম ট্রেনের ওপরের সিটে। এসময় হালিম মোল্লা খাবার আনতে নিচের দিকে নামেন। হঠাৎ কী যে হয়ে গেলো কিছুই বুঝতে পারছি না। যেই বগিতে ছিলাম বড় ঝাঁকুনি লাগে।’

ট্রেন দুর্ঘটনার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা শুনিয়েছেন তিনি, ছবি: এবিপি

তিনি আরও বলেন, ‘আহত অবস্থায় হালিমকে উদ্ধার করা হয়। অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার সময় মারা যান। কাজের জন্য কেরালায় যাচ্ছিলেন তিনি। এখন প্রশাসন তার পরিবারকে কিছু টাকা-পয়সা দেবে বোধহয়।’ এ ঘটনায় তিনি নিজেও আহত হয়েছেন বলেও জানান।

ভারতের ইতিহাসে গত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার প্রায় তিনশত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। হালিমের মতো এদিন আরও বহু মানুষ করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন। যাদের অনেকেই চিকিৎসা ও কাজের জন্য যাচ্ছিলেন।

এমন দুর্ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে দেশটির সরকার। শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় ছাড়াও কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীসহ অনেকে। ট্রেনের অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছেন কেউ কেউ।

রেলওয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১০-১২টি বগি বালেশ্বরের কাছে লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত বগিগুলো ছিটকে পড়ে উল্টো দিকের লাইনে। কিছু ক্ষণ পর উল্টো দিকের লাইন দিয়ে আসে হাওড়াগামী যশবন্তপুর এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনটি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ছিটকে পড়া বগির ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে যশবন্তপুর এক্সপ্রেসেরও ৩ থেকে ৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়।’