বাঁচানো গেলো না শিনজো আবেকে

মারা গেলেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। শুক্রবার (৮ জুলাই) বন্দুকধারীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন ৬৭ বছর বয়সী এই রাজনীতিক। তিনি ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন। দলের পক্ষ থেকেও মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

নারা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, জাপানের স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ৩ মিনিটে শিনজো আবেকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। তাকে বাঁচাতে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছেন ২০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তবে ঘাতক বুলেট তার বুকের যথেষ্ট গভীরে পৌঁছে যায় বলে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

শুক্রবার (৮ জুলাই) পশ্চিম জাপানের নারা শহরে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হলে লুটিয়ে পড়েন তিনি। জাপানের সংবাদমাধ্যম এনএইচকে বলছে, পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৪১ বছর বয়সী একজন সন্দেহভাজনকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এনএইচকের এক প্রতিবেদক বলেন, বন্দুকের গুলির মতো শব্দ পেয়েছেন। পরে শিনজো আবেকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেন। উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি জাপানের এই জনপ্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। 

শিনজো আবের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে জাপানে। তার মৃত্যুর খবরে শোক বার্তা পাঠাচ্ছেন বিশ্বনেতারা। গভীরভাবে শোক প্রকাশ করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি জাপানের একজন মহান প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বলে টুইটারে উল্লেখ করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।

টুইট বার্তায় শোক জানিয়ে শিনজো আবেকে অকৃত্রিম বন্ধু আখ্যায়িত করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

আবে ২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত প্রথমবার জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা আট বছর গৌরবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। স্বাস্থ্যগত কারণ উল্লেখ করে ২০২০ সালে তিনি পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগের পর লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা হন ইয়েশোহিদি সুগা। পরে তার জায়গা নেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।

প্রধানমন্ত্রী না হলেও জাপানে তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। সম্ভবত গত তিন দশকের মধ্যে জাপানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রাজনীতিক।

সূত্র: সিএনএন, বিবিসি