তুরস্কে গুলেনপন্থী অভিযোগে ৯ হাজার পুলিশ বরখাস্ত

_95802121_arrestsযুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইসলামি বক্তা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারী হওয়ার অভিযোগে তুরস্কের পুলিশ বাহিনীর ৯হাজারেরও বেশি কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তুরস্কের পুলিশ বাহিনী জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তার খাতিরেই এসব কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে গুলেন সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে ১ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

গত বছরের জুলাইয়ে তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার নেপথ্যে ফেতুল্লাহ গুলেনকে দায়ী করে আসছে দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোয়ানের তুর্কি সরকার। ওই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার জন্য শুরু থেকেই গুলেনকে দায়ী করে আসা হচ্ছে। ১৯৯৯ সাল থেকে গুলেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। নির্বাসনে থেকেই তিনি ‘হিজমেত’ নামক একটি আন্দোলন পরিচালনা করেন। ২০১৩ সালে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন চলাকালে এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার পার্টির  নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে গুলেনপন্থীরা।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সয়লু জানান, ‘আমাদের পুলিশ বাহিনীতে গুলেনের একটি অনুপ্রবেশকারী নেটওয়ার্ক রয়েছে। সেই নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে রাতভর অভিযান ও ধরপাকড় চালানো হয়েছে। তাদের সিক্রেট ইমাম নামে ডাকা হয়ে থাকে।’ তিনি জানান, হাজারেরও বেশি সিক্রেট ইমামকে আটক করা হয়েছে। এখনও অভিযান চলছে।

গত জুলাইয়ের অভ্যুত্থান চেষ্টার পর ৪০ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চাকরিচ্যুত ও বরখাস্ত করা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষকে। এর মধ্যে রয়েছেন সেনা, পুলিশ, শিক্ষক ও সরকারি কর্মকর্তা।

সর্বশেষ এই অভিযান গত কিছুদিনের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও সর্বব্যাপী অভিযান। বিতর্কিত গণভোটে তুর্কি প্রেসিডেন্ট হিসেবে এরদোয়ানের ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব পাস হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই এ অভিযান শুরু হয়েছে। বিরোধীদের আশঙ্কা, বিভক্তির গণভোটে জয়ের পর এরদোয়ান স্বৈরতান্ত্রিক হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। গণভোটের দুই দিনের মাথায় তুর্কি পার্লামেন্ট নয় মাস ধরে চলমান জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়িয়েছে।

গুলেনপন্থীদের বিরুদ্ধে অভিযান ও ধরপাকড়ে ইউরোপও শঙ্কা জানিয়েছে। তুরস্কের ইউরোপীয় ইউনিয়নের যোগদানকেও আশঙ্কায় ফেলে দিয়েছে। এ অভিযান শুরুর পর জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গণ আটকের বিষয়টিকে উদ্বেগের সঙ্গেই বিবেচনা করা হচ্ছে। সূত্র: বিবিসি।

/এএ/এমএনএইচ/