সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ডেরায় চলমান সংঘাতে জর্ডান সীমান্তের দিকে ছুটে যাওয়া ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কোনও রকম আশ্রয় ছাড়া মরুভূমিতে আটকা পড়া এসব মানুষদের সহযোগিতার জন্য ত্রাণ গোষ্ঠী ও চিকিৎসকরা আহ্বান জানিয়েছেন। এখবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
জর্ডান ও ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী ডেরা সিরিয়ার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল। সেখানে সিরীয় সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আত্মসমর্পণের আলোচনা চলছে। কিন্তু জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহে সিরীয় অভিযানের মুখে ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ ডেরা ছেড়ে জর্ডান ও ইসরায়েল সীমান্তের পালিয়েছেন। এদের মধ্যে ১ লাখ ৬০ হাজার গোলান হেইটস ও ইসরায়েল সীমান্তের দিকে ছুটে গেছেন। ডেরাতে সরকারি অভিযানে দুই শতাধিক বেসামরিক নিহত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গোলান হেইটসের কাছে কিউনেইত্রাতে অবস্থান করা এক চিকিৎসক বলেন, মানবিক পরিস্থিতি খুব খারাপ। এলাকাটি খুব ছোট। পুরো শহর ও গ্রাম বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এটা বড় ধরনের ট্র্যাজেডি।
চিকিৎসাকর্মীরা জানান, ১৯ জুন শুরু হওয়া অভিযানে আটটি হাসপাতালে বোমা ফেলা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন ইউএনএইচসিআর জানায়, প্রায় ৪০ হাজার সিরীয় জর্ডান সীমান্তে অবস্থান করছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে সাড়ে ছয় লাখ নিবন্ধিত সিরীয় শরণার্থী রয়েছেন। জর্ডানে জাতিসংঘের আবাসন ও মানবাধিকার বিষয়ক সমন্বয়ক অ্যান্ডার্স পেডারসেন বলেন, সংকট শুরুর পর এটাই সিরিয়ায় সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনা।
গত দুই মাসে বাস্তুচ্যুতদের মানবিক সহায়তা দিচ্ছে জাতিসংঘও। পেডারসন বলেন, বাস্তুচ্যুত শিশুরা পানিশূন্যতা ও ডায়রিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি বলেস, ‘জাতিসংঘ সহায়তা করতে প্রস্তুত। তবে একইসময়ে আমরা মনে করিয়ে নিতে চাই এই সংকটের জন্য দায়ী সবাইকে সুরক্ষা ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।’ এই সংকটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে সীমান্তের দিকে ছুটে গেলেও এই সিরীয়দের জীবন এখনও আশঙ্কামুক্ত নয়। ইসরায়েল ও জর্ডান শরণার্থী গ্রহণে রাজি হচ্ছে না।
সীমান্ত খুলে না দেওয়ায় আন্তর্জাতিক চাপ ও সমালোচনার মুখে পড়েছে জর্ডান। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য জর্ডানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। যদিও দেশটি জানিয়েছে, শরণার্থী গ্রহণ না করলেও তাদেরকে ত্রাণ দিতে প্রস্তুত ও সিরিয়া সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে তারা।