ফিলিস্তিনি গ্রাম ধ্বংসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আদালতের স্থগিতাদেশ

ফিলিস্তিনের একটি গ্রাম ধ্বংস করে দেওয়ার ইসরায়েলি সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার আটকে দিয়েছে দেশটির আদালত। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গ্রামটি ধ্বংস করার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিল। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডিল ইস্ট আই লিখেছে, খান আল আহমার নামের গ্রামটি ধ্বংস করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে ইসরায়েল অব্যহতভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে রয়েছে। এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘ মন্তব্য করেছে, গ্রাম ধ্বংসের সিদ্ধান্ত ‘মাবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং মানবাধিকার আইন অনুযায়ী তা বিচার্য।’Khan-Al-Ahmar-Map_0

ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছে যে খান আল আহমার ধ্বংসের বিরুদ্ধে তা ফিলিস্তিনের পশ্চিম তিরে অবস্থিত একটি বেদুঈন অধ্যুষিত এলাকা। রায়ের আগের দিন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গ্রাম ধ্বংসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সংহতি জানাতে যাওয়া ব্যক্তিদের ওপর হামলা চালায়। সে সময় ৩৫ জন আহত হন যাদের মধ্যে ৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করে লেগেছিল। এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে যাদের মধ্যে রয়েছে একটি কিশোরী।

গত মে মাসে ১৮০ বাসিন্দার ওই গ্রামটি ধ্বংসের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছিল দেশটির হাইকোর্ট। কিন্তু এবার সুপ্রিম কোর্ট ওই আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আদালতের এই স্থগিতাদেশের পেছনে রয়েছে জমির মালিকানা সম্পর্কিত উত্থাপিত দাবি। আগামী ১১ জুলাইয়ের মধ্যে ইসরায়েলকে গ্রামটির জমির মালিকানা সংক্রান্ত প্রমাণপত্র আদালতে হাজির করতে হবে। আদালতের কাছে দাবি করা হয়েছে, ইসরায়েল যে খান আল আহমার গ্রাম ধ্বংস করে দিতে চাচ্ছে তা প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমির ওপর অবস্থিত। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংক্রান্ত সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ পশ্চিম তীরে যে কার্যালয় স্থাপন করেছে তার পরিচালক স্কট অ্যান্ডারসন মন্তব্য করেছেন, ‘ওই বাসিন্দারা প্রকৃতপক্ষে ফিলিস্তিনি শরণার্থী। আগে একবার তাদেরকে নেগেভ থেকে উৎখাত করা হয়েছে। এখন দ্বিতীয়বারের মতো তাদের বাস্তুচ্যুত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়।’

মিডিল ইস্ট মনিটর লিখেছে, ইসরায়েল নিয়মিত ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ধ্বংস করে দেয়। তাদের অজুহাত, সেগুলো অনুমোদনবিহীন। কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, পশ্চিম তীরের ৬০ শতাংশ এলাকায় ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করতে দিতে চায় না। ওইসব এলাকায় তারা তাদের অবকাঠামো নির্মাণ করে, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি।

ফিলিস্তিনি আন্দোলনকারী ও কর্মকর্তারা মন্তব্য করেছেন, ইসরায়েলের ইচ্ছা ফিলিস্তিনিদের আবাসভূমিতে অবৈধভাবে বসতি সম্প্রসারণ করা এবং পূর্ব জেরুজালেমকে পশ্চিম জেরুজালেম থেকে পৃথক করে ফেলা। তার দক্ষিণ জেরুজালেম থেকেও দক্ষিণ জেরুজালেমকে পৃথক করে ফেলতে চায়, যাতে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় যেতে ফিলিস্তিনিদের দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়ে।