সিরিয়ায় আইএসবিরোধী চূড়ান্ত লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র, অর্থ যোগাচ্ছে সৌদি ও আমিরাত

সিরিয়াতে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে চলা অভিযান গুছিয়ে আনতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের লক্ষ্য এখন ইউফ্রেটিস উপত্যকায় ঘাঁটি গেঁড়ে বসা আইএস জঙ্গিরা। কিন্তু যেসব এলাকা আইএসের কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে সেসব এলাকা আইএসমুক্ত রাখা যাবে কি না তা নিয়ে স্থানীয় মিত্রদের মধ্যে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এর মূল কারণ সিরিয়ায় আইএসবিরোধী অভিযানে মার্কিন বরাদ্দ ২০ কোটি ডলার কমে গেছে। এখন মিত্র গোষ্ঠীগুলোকে সংশ্লিষ্ট মার্কিন কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করে বলছেন, যে পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্র হ্রাস করেছে তার চেয়ে বেশি অর্থ মিত্র দেশগুলো দিচ্ছে অভিযান সফলভাবে সমাপ্ত করতে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান লিখেছে, সিরিয়াকে আইএসমুক্ত রাখতে ৩০ কোটি ডলারের তহবিল যোগান দিচ্ছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য কয়েকটি দেশ।সিরিয়ায় মার্কিন উপস্থিতি

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের কারণে সিরিয়াতে মার্কিন মিত্র গোষ্ঠীগুলো আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল দেশটির ওপর থেকে। গত মার্চে তিনি সিরিয়ার জন্য বরাদ্দ করা অর্থ ছাড়ের অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং দুই হাজার মার্কিন সেনার সিরিয়া ত্যাগের ঘটনা খুব দ্রুত ঘটে যাচ্ছে বলে ঘোষণা দেন।

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর রাশিয়া ও ইরান সমর্থিত সিরিয়ার সরকারি বাহিনী দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান নেওয়া মার্কিন সমর্থনপুষ্ট সিরিয়ান বিদ্রোহীদের একবারে নির্মূল করে ফেলে। এই অবস্থা দেখে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট কুর্দি সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স (এসডিএফ) আসাদ সরকারের সঙ্গে সমঝোতার আলোচনা শুরু উদ্যোগ নেয়। ফলে সার্বিকভাবে সিরিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ক্ষুণ্ন হয়। এমন পরিস্থিতিতে মিত্র গোষ্ঠীগুলোকে আশ্বস্ত করতে গত শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানালো তারা আইএস দমনের অভিযানে সিরিয়া থেকে এখনই সরে যাচ্ছে না। আর তহবিল সংকট নিয়েও আস্থা হারাবার কিছু নেই।

আইএসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জোটের মুখপাত্র ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেছেন, ‘আমরা সিরিয়াতে থাকছি। আমাদের লক্ষ্য আইএসকে সমূলে উৎপাটন করা। আমরা এখনও চূড়ান্ত অভিযান শুরু করিনি। সেটার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমরা তা কার্যকর করব যখন আমরা ঠিক মনে করব। তবে এটা নিশ্চিত, সেই সময় এগিয়ে আসছে।’ শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সিরিয়াকে স্থিতিশীল করতে প্রয়োজনীয় আলোচনার দায়িত্ব অর্প্ন করা হয়েছে ইরাকে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালনকারী জেমস জেফরিকে। তিনি সিরিয়াবিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

গার্ডিয়ান লিখেছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের ইন্সপেক্টর জেনারেলের এ মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জুন পর্যন্ত ইসলামিক স্টেটের হাতে সিরিয়ার পাঁচ শতাংশ এলাকার দখল ছিল। সিরিয়াতে তাদের ১৪ হাজারের মতো সদস্য সক্রিয়।