ইরানি কুচকাওয়াজে হামলা, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪

ইরানের সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে উপনীত হয়েছে। হামলায় আহতের সংখ্যা অন্তত ৫৪। নিহতদের মধ্যে দেশটির রেভ্যুলেশনারি গার্ডের সদস্যদের পাশাপাশি কুচকাওয়াজ দেখতে যাওয়া নারী ও শিশুরাও রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার করে কেউ বিবৃতি না দিলেও ইরান সৌদি আরব সমর্থিত আহওয়াজ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলার জন্য দায়ী করেছে। এরা নিজেদের আরব জাতীয়তাবাদী হিসেবে পরিচয় দেয়। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা দুইজন হামলাকারীর নিহত হওয়ার সংবাদ দিয়ে জানিয়েছে, পালিয়া যাওয়া হামলাকারীদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে ইরান।180922044651-iran-parade-attack-09-22-18-exlarge-169

শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের আহওয়াজ শহরে কুচকাওয়াজ চলা অবস্থায় হামলার ঘটনা ঘটে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কুচকাওয়াজ চলাকালে বন্দুকধারীরা দূর থেকে গুলি চালাতে শুরু করে। তারা একসময় মঞ্চে উপবিষ্ট সেনা কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করেও হামলা চালায়। তাদেরকে পাল্টা জবাব দেয় ইরানি বাহিনীর সদস্যরা। গোলাগুলির এই ঘটনা চলে প্রায় দশ মিনিট ধরে।

খুজেস্তান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর জানিয়েছেন, হামলাকারীদের দুইজন পাল্টা গুলিতে নিহত হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে দুইজনকে। আর বাকিরা পালিয়ে গেছে। প্রাথমিভাবে এই হামলায় নিহতের সংখ্যাকে ১০ জন হিসেবে উল্লেখ করেছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। কিন্তু ইরানের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেলের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ২৪-এ এসে ঠেকেছে।

কোনও জঙ্গি সংগঠন এই ঘটনার দায় স্বীকার না করলেও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ এ ঘটনার জন্য নাম উল্লেখ না করে ‘বিদেশি শক্তির’ দিকে আঙুল তুলে টুইটারে লিখেছেন, ‘সন্ত্রাসীদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও অর্থ দেওয়া বিদেশি শক্তি আহওয়াজে হামলা চালিয়েছে। শিশু ও সাংবাদিকরা প্রাণ হারিয়েছেন। সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া আঞ্চলিক শক্তি এবং তাদের প্রভু যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার জন্য দায়ী। ইরানিদের জীবন রক্ষার জন্য ইরান খুব দ্রুতই এবং চরমভাবে পাল্টা জবাব দেবে।’

আলা জাজিরাকে তেহরানভিত্তিক একজন সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, ‘রেভ্যুলেশনারি গার্ডের কর্মকর্তারা আহওয়াজি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এই হামলার জন্য দায় মনে করেন। এদেরকে সৌদি আরব প্রশিক্ষণ ও সমর্থন দেয়। এরা বিগত কয়েক বছর ধরেই কার্যক্রম চালাচ্ছে। এদের লক্ষ্য, ইরানের তেল সমৃদ্ধ খুজেস্তান প্রদেশকে ইরান থেকে আলাদা করে ফেলা, ঠিক যেটা সাদ্দাম হোসেন চেয়েছিলেন। তারা নিজেদেরকে আরব জাতীয়তাবাদী হিসেবে আখ্যায়িত করলেও আমরা জানি, মুজাহিদিন-ই-খাল্কের সঙ্গে তারা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখে।’ মুজাহিদিন-ই-খাল্কের বিরুদ্ধে হাজার হাজার ইরানি নারী ও শিশুকে হত্যার অভিযোগ আছে।

180922095916-iran-3-exlarge-169