ইসরায়েলি সেনা সদস্যেদের বিরুদ্ধে চুরি ও যৌন হয়রানির অভিযোগ

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবস্থিত নিরাপত্তা চৌকিতে দায়িত্ব পালনের সময় চুরি ও নারীদের যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দুই সদস্যের বিরুদ্ধে। তারা একদিকে কৌশলে মধ্যবয়সী ফিলিস্তিনি নারীদের ব্যাগ থেকে অর্থ চুরি করত অন্যদিকে আইনে নিষেধ থাকা সত্ত্বেও নারীদের শরীর তল্লাশি করত। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা মিডিল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যদের এমন আচরণ নতুন নয়। আগে চুরির ঘটনার পাশাপাশি রীতিমত বন্দুকের মুখে জিম্মি করে ফিলিস্তিনিদের অর্থ লুটের ঘটনা ঘটিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যরা।2016_12_30-Israeli-forces-shoot-Palestinian-woman-at-Qalandia-checkpoint-4

অর্থ চুরি ও যৌন হয়রানি অভিযোগে শনিবার (২১ অক্টোবর) অভিযুক্ত দুই সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে শুনানি হয়েছে জাফার সামরিক আদালতে। সেখানে উপস্থাপিত তথ্য থেকে জানা গেছে, অভিযুক্তরা জেরুজালেম ও রামাল্লার মধ্যে অবস্থিত কালান্দিয়া চেক পোস্ট দিয়ে পারাপারহ ওয়া ফিলিস্তিনিদের তল্লাশি চালানোর সময় অর্থ চুরি করেছে। অন্যদিকে যৌন হয়রানির বিষয়ে জানা গেছে, অভিয্যক্ত দুই সেনা সদস্য নারী পর্যটকদের তল্লাশি চালানোরর সময় তাদের শার্ট খুলে ফেলতে বলেছিল। আর এমন ঘটনা  তারা  ঘটিয়েছে অন্তত দুইবার। অথচ ওই চেক পয়েন্টে তল্লাসির বিষয়ে যে স্থায়ী আদেশ জারি রয়েছে তাতে নারীদের বাহিনীর পুরুষ সদস্যদের দ্বারা শরীর তল্লাশি নিষিদ্ধ।

আদালতে উপস্থাপিত তথ্যের বরাতে মিডিল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, ২০১৮ সালের মার্চ ও সেপ্টেম্বর মাসে  ইসরায়েলি সেনা সদস্যরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ফিলিস্তিনি যাত্রীদের তল্লাশি করার সময় অর্থ চুরি করেছে। তার কৌশলে একই শিফট বেছে নিত একসঙ্গে কাজ করার জন্য। চেকপোস্টে আসা মধ্যবয়সী ফিলিস্তিনি নারী যাত্রীদের ব্যাগ এক্সরে মেশিনে পাঠিয়ে দিয়ে তারা ব্যাগ থেকে অর্থ সরিয়ে নিত। অথচ ব্যাগ এভাবে এক্সরে মেশিনে পাঠানোটাও ইসরায়েলি আইনের লঙ্ঘন।

জাফার সামরিক আদালত অভিযুক্তদের লুট, লুটের চেষ্টা, যৌন হয়রানি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী ঘোষণা করেছে। আদালত বলেছে, অভিযুক্তদের মধ্যে বর্ণবাদী মনোভাব রয়েছে। তারা তাদের এমন কাজের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বলেছে, যেহেতু ফিলিস্তিনিরা ইহুদিদের ‘আঘাত’ করছে সেহেতু তাদের সম্পদ হাতিয়ে নেওয়াটা ‘ন্যায়সঙ্গত।’

ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যদের এমন আচরণ নতুন কোনও ঘটনা নয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে ইসরায়েলি মিলিটারি পুলিশের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার ডলার চুরি করার অভিযোগ উঠেছিল। এদের মধ্যে একজন রীতিমত বন্দুকের মুখে জিম্মি করে ফিলিস্তিনিদের অর্থ লুট করার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিল।