ইরাকি বিক্ষোভ দমনে স্নাইপার মোতায়েন ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াদের: রয়টার্স

ইরান সমর্থিত মিলিশিয়ারা ইরাকে বড় ধরনের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে রাজধানী বাগদাদের বিভিন্ন ভবনের ছাদে স্নাইপার মোতায়েন করেছিল। দুই ইরাকি গোয়েন্দা কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

download

ইরাকি রাজনীতির জটিলতার মধ্যে মিলিশিয়া যোদ্ধাদের মোতায়েনের কথা এর আগে জানা যায়নি। ১ অক্টোবর শুরু হওয়া বিক্ষোভে শতাধিক ও প্রায় ৬ হাজার মানুষ আহত হয়েছিলেন। ইরাকি বিক্ষোভে মিলিশিয়া মোতায়েনের ঘটনা দেশটিতে ইরানের প্রভাব বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। অনেক সময় মিলিশিয়ারা ইরাকি নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে তবে তাদের নিজস্ব কাঠামো রয়েছে।

ইরাকি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানান, ইরান সমর্থিত মিলিশিয়ারা গণবিক্ষোভে নিজেরাই ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদির সরকারকে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেয়। এক বছর পুরনো এই সরকারের প্রতি ইরান সমর্থিত মিলিশিয়ারা ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর বড় ধরনের সমর্থন রয়েছে।

এক ইরাকি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, আমাদের কাছে নিশ্চিত প্রমাণ রয়েছে যে, মিলিশিয়াদের স্নাইপাররা সরাসরি তাদের কমান্ডারের নির্দেশ পালন করছিল, আমাদের সেনা প্রধানের নয়। এই মিলিশিয়ারা ইরানিদের ঘনিষ্ঠ একটি গোষ্ঠীর সদস্য।

ইরাক সরকারর প্রতিদিনের গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ে অংশ নেওয়া আরেক নিরাপত্তা সূত্র জানায়, বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে কালো পোশাক পরিহিত মিলিশিয়ারা বিক্ষোভকারীদের গুলি করে। ওই দিন নিহতের সংখ্যা ৬ থেকে ৫০ জনের বেশিতে দাঁড়ায়। এই স্নাইপারদের নির্দেশনা দিচ্ছেন হাশিদ নামের গোষ্ঠীর গোয়েন্দা প্রধান। এই শিয়া আধাসামরিক বাহিনী ইরান সমর্থিত।

অপর এক সূত্র জানিয়েছে, হাশিদ নেতাকে ওই বিক্ষোভ দমনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে কোনও সূত্রই জানায়নি কতজন স্নাইপার মোতায়েন করা হয়েছিল।

ইরান সমর্থিত মিলিশিয়াবাহিনী হাশিদের এক মুখপাত্র আহমেদ আল-আসাদি বিক্ষোভ দমনে অংশ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বিক্ষোভ এলাকায় আমাদের কোনও সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। বিক্ষোভ মোকাবিলায় আমাদের কোনও সদস্য অংশ নেয়নি।

ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাদ মান জানান, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী সরাসরি বিক্ষোভকারীদের গুলি করেনি। বিক্ষোভকারীদের হত্যাকাণ্ডের জন্য তিনি অজ্ঞাতদের দায়ী করেছেন।

এই দাবি ৭ অক্টোবর সরকারের দেওয়ার বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ওইদিন বলা হয়েছিল, ইরাকি নিরাপত্তাবাহিনী চূড়ান্ত বলপ্রয়োগ করেছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

মিলিশিয়াদের স্নাইপার মোতায়েনের বিষয়ে ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে হাশিদ বা অন্য নিরাপত্তাবাহিনীকে দায়ী করা এখনই উচিত হবে না। অপেক্ষা করুন এবং দেখুন কারা গুলি করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে।