নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধের চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলো তুরস্ক

অবশেষে নারীর প্রতি সহিংসতা মোকাবিলা এবং সুরক্ষার জন্য বাধ্যতামূলক একটি চুক্তি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে গেলো তুরস্ক। ব্যাপক সমালোচনার মুখেই 'ইস্তাম্বুল কনভেনশন' চুক্তি থেকে সরে গেলে দেশটি। ১ জুলাই থেকেই এটি কার্যকর হতে চলছে। এই কনভেনশনে সমকামীদের প্রতি সহমর্মিতা দেখাচ্ছে উল্লেখ করেছে আঙ্কারা।

গত মার্চ মাসেই তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান এই কনভেনশনকে বিতর্কিত অ্যাখ্যা দিয়ে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেন। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘এই কনভেনশন সমকামীদের আশ্রয় দেওয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি সমকামীদের প্রতি সহমর্মিতা দেখাচ্ছে। সমকামিতা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারবে না তুরস্ক ’। এমন অজুহাতেই আলোচিত ইস্তাম্বুল কনভেশনের চুক্তি থেকে নিজেদের বের করে আনলো এরদোয়ান সরকার।

বৈবাহিক ধর্ষণ, নারীর যৌনাঙ্গহানিসহ তাদের ওপর সব ধরনের সহিংসতা রোধে সরকারকে আইন প্রণয়নের কথা ইস্তাম্বুল কনভেনশনে বলা হয়। এ ছাড়া অপরাধীদের দায়মুক্তি বন্ধে আইন প্রণয়নের বিষয়টিও ওই চুক্তিতে উল্লেখ আছে। ২০১১ সালের ১১ মে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা কাউন্সিল অফ ইউরোপ একটি মানবাধিকার চুক্তি স্বাক্ষরে সব দেশের প্রতি আহ্বান জানায়। চুক্তিটি ‘ইস্তাম্বুল কনভেনশন’ নামে পরিচিত।

এরদোয়ান সরকারের সিদ্ধান্তকে বিতর্কিত উল্লেখ করে বুধবার ফেডারেশন অব তুর্কি মহিলা সমিতির সভাপতি কানান গুল্লু জানান, ‘আমরা আমাদের সর্বাত্মক লড়াই চালিয়ে যাবো। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তুরস্ক নিজের পায়ে গুলি চালিয়েছে’। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে নারী অধিকার কর্মীরা। তুরস্কের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও এর সমালোচনা করেছে।

নারী অধিকার সংগঠনের পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি। আঙ্কারার এই সিদ্ধান্তকে 'বিপজ্জনক বার্তা' অ্যাখা দিয়েছে সংগঠনটি।