পাপেই জন্ম ইসরায়েলের: সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে

ইসরায়েলের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী মোশে শারেটের পুত্র ইয়াকভ শারেট। তার সঙ্গে প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে আলাপ হয় ইসরায়েলি সাংবাদিক অফার আডেরেটের। সেখানেই নিজ দেশের ‘জন্মের পাপ’ নিয়ে আলাপ তোলেন প্রবীণ এই মানুষটি। সাংবাদিক জানতে চান, তিনি যা বলেছেন সেটি বুঝেশুনে বলছেন কিনা? ৯৫ বছরের ইয়াকভ হাসলেন এবং মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক ইঙ্গিত দিলেন।

একেবারে বাহুল্যবর্জিত, তীক্ষ্ণ আলাপ। নিজের সোজাসাপ্টা কথাগুলো কাটছাঁট করার কোনও প্রয়োজন বোধ করছিলেন না তিনি। পাঠকদের কাছে এমন একটি বার্তা পাঠাতে চান, যেটি হজম করা বেশ কঠিন।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তির পুত্র জায়নবাদবিরোধী হিসেবে তার দিন শেষ করছেন। তিনি পুরো দুনিয়া থেকে ইহুদিদের ইসরায়েলে জড়ো হওয়ার বিরোধী। লোকজনের ইসরায়েল ছেড়ে যাওয়াকে উৎসাহিত করেন তিনি। নিজ দেশের জন্য অন্ধকার দিনের ভবিষ্যদ্বাণী করেন। এমনকি তিনি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সমর্থন করেন। অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে ইহুদি ব্রিগেডের জন্য স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। কাজ করেছেন শিট বেন সিকিউরিটি সার্ভিসে।

ইয়াকভ শারেট বলেন, ‘ইসরায়েল রাষ্ট্র এবং জায়নিস্ট এন্টারপ্রাইজের জন্ম পাপের মধ্য দিয়ে। এই পাপ আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে, এটি আমাদের তাড়া করবে এবং ঝুলিয়ে দেবে। আমরা এটিকে ন্যায্যতা দিই। এটি একটি অস্তিত্ববাদী ভীতিতে পরিণত হয়েছে। এটি নিজেকে সব ধরনের উপায়ে প্রকাশ করে। পানিপৃষ্ঠের নিচে একটি ঝড় রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি শান্তিতে এই বয়স পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছি। আমার আর্থিক অবস্থা ভালো। কিন্তু আমি আমার নাতি-নাতনি এবং তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ ও পরিণামের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন।’

তিনি বলেন, ‘নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমি একটি অপরাধী দেশের বাধ্যতামূলক সহযোগী। আমি এখানে আছি, আমার কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। আমার বয়সের কারণে আমি কোথাও যেতে পারি না। এটা প্রতিদিন আমাকে বিরক্ত করে। শেষ পর্যন্ত ইসরায়েল একটি দখলদার রাষ্ট্র এবং এটি অন্য জনগোষ্ঠীকে অপব্যবহার করে।

ইয়াকভ শারেট এবং রিনা দম্পতির তিনটি সন্তান, পাঁচ নাতি-নাতনি এবং তাদের আট সন্তান এরইমধ্যে নিউ ইয়র্কে পাড়ি জমিয়েছে। সূত্র: হারেৎজ।