কতটা বিলাসবহুল ছিল প্রিন্সেস হায়ার দাম্পত্য জীবন

বিবাহ বিচ্ছেদের আগেই বিলাসবহুল জীবন কাটিয়েছেন প্রিন্সেস হায়া। চলাফেরায় কোনও কমতি যেন না হয় সেজন্য প্রিন্সেস এবং তার সন্তানদের জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ রাখতেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম। যা অবাক করার মতো।

২০১৯-এর আগে প্রিন্সেস হায়া এবং সন্তানদের খরচের জন্য বছরে ৮ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড, নিজের জন্য ৯০ লাখ পাউন্ড এবং অন্যান্য খাতে ভাতা বরাদ্দ রাখতেন শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম। এই দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে কন্যা জলিলার বয়স ১৪ এবং পুত্র জায়েদের বয়স নয়।

প্রিন্সেস এবং দুবাইয়ের শাসকের বিবাহ বিচ্ছেদের আগে তাদের সন্তান জলিলা এবং জায়েদের আলাদা বার্ষিক ভাতা ছিল প্রায় ১ কোটি পাউন্ড। শেখের নিজস্ব বিমানের বহরে তাদের প্রবেশের অনুমতি ছিল। এর মধ্যে ছিল একটি বোয়িং ৭৪৭। হেলিকপ্টরের পাশাপাশি ৪০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের প্রমোদতরীতেও ভ্রমণ করতো তারা। ছিল কয়েকটি কোটি মূল্যের পাউন্ডের সম্পত্তি। শুধু কি তাই, প্রিন্সেস হায়া এবং তার সন্তানদের সেবায় নিযুক্ত ছিলেন ৮০ জন কর্মী।

শুনানিতে আদালতকে জানান, সম্পর্ক থাকাকালীন এক গ্রীষ্মেই এই দম্পতি শুধু স্ট্রোবেরি ফলের পেছনেই ২০ লাখ পাউন্ড খরচ করেন। শখের ঘোড়া কেনা এবং কয়েক বছর ধরে চড়াতে ৫০ লাখ পাউন্ড অর্থ প্রদান করেন স্বামী শেখ মোহাম্মদ। বিচ্ছেদের আগে হায়ার সন্তানদের জন্য বছরে বড় অঙ্কের বরাদ্দ রাখতেন। ছুটির দিনগুলোতে সন্তানদের ভ্রমণে থাকতো বিশেষ ব্যবস্থা। বছরে নয় সপ্তাহের বিদেশে সফরের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০ লাখের বেশি পাউন্ড। 

এই রাজকীয় দম্পতির বিচ্ছেদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ব্রিটিশ আদালতে শুনানি চলে আসছিল। মঙ্গলবার আদালত দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম এবং তার সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনত আল-হুসেইনের বিবাহ বিচ্ছেদের আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় অনুযায়ী, প্রিন্সেস হায়া সব মিলিয়ে ৫৫০ মিলিয়ন পাউন্ড সমপরিমাণ অর্থ পাবেন। রায়ে জর্ডানের সাবেক রাজা হুসেইনের কন্যা ৪৭ বছর বয়সি প্রিন্সেস হায়াকে এককালীন ২৫ কোটি ১৫ লাখ পাউন্ড দিতে বলা হয়েছে। প্রিন্সেস হায়া শেখ মোহাম্মদের ষষ্ঠ এবং কনিষ্ঠতম স্ত্রী।

উল্লেখ্য, হায়া ২০১৯ সালে দুবাই থেকে তার দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যান। তিনি জানান, শেখ মোহাম্মদ এর আগে তার দুই মেয়ে শেখ লতিফা ও শেখ শামসাকে অপহরণ করিয়েছেন। ফলে তিনি এখন তার নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কার মধ্যে আছেন।