সম্পর্ক উষ্ণ করতে ইসরায়েল যাচ্ছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু এই সপ্তাহে ইসরায়েল সফরে যাচ্ছেন। গত ১৫ বছরের মধ্যে কোনও তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটিই প্রথম সফর। বেশ কয়েক বছর উত্তেজনার পর সম্প্রতি সম্পর্ক উষ্ণ করতে নেওয়া উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইসরায়েল সফর করবেন তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।

তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকতে পারেন জ্বালানি মন্ত্রী ফতিহ ডোনমেজ। বুধবার তিনি চাভুসোগলু ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এর আগের দিন তিনি আলোচনা করবেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের সঙ্গে।

দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়টি থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলের প্রাকৃতিক গ্যাস ইউরোপে পৌঁছে দিতে ইসরায়েল-তুরস্ক অংশীদারিত্বের বিষয়ে সম্মত আঙ্কারা।

আলোচনায় আরও বেশ কিছু ইস্যু স্থান পেতে পারে। বিশেষ করে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় চালু করার বিষয়টি। ২০১৮ সালে জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলি দূতাবাস চালুর বিরোধিতায় বিক্ষোভে ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হলে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে তুরস্ক।

এই ঘটনার পর থেকে ইসরায়েল ও তুরস্কের সম্পর্কে অবনতি ঘটে। এমনিতেই ২০০০ দশকের শেষ দিকে আঙ্কারা ও তেল আবিবের সম্পর্কে জটিলতা বিরাজ করছিল। বিশেষ করে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপনের বিরোধিতায় তুরস্ক সোচ্চার ছিল। একই সময়ে গাজার নিয়ন্ত্রক হামাসকে তুরস্কের সহযোগিতা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল ইসরায়েল।

আঞ্চলিক কয়েকটি ইস্যুতেও দুই দেশের পরস্পরবিরোধী অবস্থান ছিল। যেমন- ২০১৩ সালে মিসরে অভ্যুত্থান এবং ২০১৫ সালের ইরানের পারমাণবিক চুক্তি, ২০১৯ সালে সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার এবং সিরীয় ভূখণ্ডে তুরস্কের সামরিক অভিযান।

তবে এই বছর দেশ দুটি তিক্ততা ভুলে সম্পর্ক উষ্ণ করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মার্চ মাসে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট ইজাক হারজগ তুরস্কের রাজধানীতে ঐতিহাসিক সফর করেন। ২০০৭ সালের পর এটি ছিল প্রথম কোনও ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের তুরস্ক সফর। যদিও ইসরায়েলে প্রেসিডেন্টের পদ সাংবিধানিক।

ওই সময় তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান ও হারজগ বলেছিলেন, তারা সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চান। এরদোয়ান দুই দেশের জ্বালানি সহযোগিতাকে এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন।

এরপর থেকে ইসরায়েল ও তুরস্কের নেতাদের মধ্যে ফোনালাপ শুরু হয়। যদিও প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি পদক্ষেপের নিন্দা জানানো অব্যাহত রেখেছেন এরদোয়ান।