‘অলৌকিক কিছু ঘটুক, বেঁচে থাকুক তারা’

ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রাণ গেছে হাজারো মানুষের। মৃত্যুর মিছিলে আরও অনেকে সামিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রচণ্ড কম্পনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর সানলিউরফাও। বাদ যায়নি সিরিয়াও। দুই দেশের হাজার হাজার ভবন ধস ছাড়াও হতাহত হয়েছে অনেক মানুষ। প্রতিবেশী দেশ দুটিতে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছে অসংখ্য মানুষ, নিখোঁজও অনেকে।

যারা ভূমিকম্পের কবল থেকে বেঁচে গিয়েছেন, শোকে পাথর হয়ে আছেন তারাও। শোকে থমকে না গিয়ে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া পরিবার ও প্রিয় মানুষদের বাঁচাতে হন্যে হয়ে ছুটছেন তারা। এর মধ্যে শুরু হয়েছে হিমশীতল বৃষ্টি। হাড়কাঁপানো শীত ও বৃষ্টিতেও প্রিয় মানুষকে খুঁজে পাওয়ার আশায় ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে বেড়াচ্ছেন তারা। 

‘ধ্বংসস্তূপের নিচে আমার বন্ধুর পরিবার চাপা পড়েছে। সকাল ১১ টা বা দুপুর পর্যন্তও সেই বন্ধুকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল। এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না, সম্ভবত তার মোবাইলের ব্যাটারির চার্জ শেষ। একটা অলৌকিক কিছু ঘটুক, তারা বেঁচে থাকুক। এখন শুধু এই আশাই করছি’, তুরস্কের বিধ্বস্ত সানলিউরফা শহরে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলছিলেন ওমর এল কুনেইদ।

ভূমিকম্পের সব খবর পড়তে ক্লিক করুন: সিরিয়া-তুরস্কে ভূমিকম্প

ঝড়-বৃষ্টি যাই আসুক বন্ধুরাসহ সেখানেই সারারাত থাকবে বলে জানান তিনি। বন্ধুর পরিবারকে জীবিত ফিরে পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তিনিসহ সঙ্গীরা।

ওমরের চারপাশে ধ্বংসাবশেষে আটকেপড়া জীবিত ব্যক্তিদের খোঁজে ধসে পড়া ভবনগুলোর বিশাল বিশাল কংক্রিটের টুকরো সরানোর চেষ্টা করছিলেন উদ্ধারকারীরা। প্রাণের সন্ধান পেতে ধসে পড়া সেই সাত তলা দালানের  ধ্বংসাবশেষে আটকেপড়া  জীবিত ব্যক্তিদের উদ্ধারে প্রাণপণ চেষ্টারত তারা।

তুরস্কের দক্ষিণে ঘটে যাওয়া কয়েক দশকের সব থেকে ভয়াবহ এই ভূমিকম্প থেকে যারা বেঁচে গেছেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছেন তারা। ভূমিকম্পের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করা থেকে তাদের বিরত রাখতে অন্য দিকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে তাদের।

কাছেই, আরও একটি বিপর্যস্ত পরিবার বৃষ্টির মধ্যে এদিক-সেদিক হাঁটছিলো। জিনিসপত্র একত্রিত করে রাত কাটানোর মতো একটি আশ্রয় খুঁজছিলো পরিবারটি।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান