ভূমিকম্পের ৪ দিন পর মা ও নবজাতককে জীবিত উদ্ধার

তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ৯০ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এক নবজাতক ও তার মাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। দশ দিন বয়সী শিশুটির নাম ইয়াগিজ। দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতায় প্রদেশের একটি বিধ্বস্ত ভবন থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তার মাকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

সোমবার ভোরের ভূমিকম্পের চার দিন পার হওয়ার পর ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া মানুষদের জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ভূমিকম্পের পর তীব্র শীতল আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। তবে তুরস্ক ও প্রতিবেশী সিরিয়ায় এখনও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নবজাতক ও তার মাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের ভিডিওতে দেখা গেছে, নবজাতক ইয়াগিজকে উষ্ণ কম্বলে মুড়িয়ে চিকিৎসার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় তুর্কি সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনাকে প্রায় অলৌকিক বলে তুলে ধরা হচ্ছে।

ইস্তাম্বুলের মেয়র ইকরেম ইমামমোগ্লুর টিমের সদস্যরা এই উদ্ধার অভিযানে জড়িত ছিলেন। মেয়র টুইটারে বলেছেন, সামানদাগ শহরে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।

রয়টার্সের পাওয়া ফুটেজে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে এক ব্যক্তিকে বের করা হয়েছে। নবজাতক ও তার মায়ের সঙ্গে এই ব্যক্তির কোনও সম্পর্ক রয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।

৭ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় ২১ হাজারের বেশি মানুষ নিহতের কথা জানা গেছে। নিহতের বেশিরভাগ তুরস্কে।

ভূমিকম্পে হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে আশ্রয়, পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বঞ্চিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তবে নতুন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান এই ভূমিকম্পকে ‘শতাব্দীর বড় দুর্যোগ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্যেও বেঁচে যাওয়া এবং সাহসী উদ্ধারের অভূতপূর্ব ঘটনা গত কয়েক দিন ধরে প্রকাশ্যে আসছে।

উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় ধসে পড়া ভবনের নিচে জন্ম নেওয়া এক কন্যা শিশুকে দত্তক নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন হাজারো মানুষ। তার নাম রাখা হয়েছে ‘আয়া’। আয়া শব্দের আরবি অর্থ অলৌকিক। উদ্ধারের সময় মায়ের সঙ্গে তার নাড়ির বন্ধন ছিল। পরিবারের অপর সদস্যদের সঙ্গে মায়েরও মৃত্যু হয়েছে।