ইয়েমেনে হুথিদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে ‘রাজি’ ইরান?

চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির অংশ হিসেবে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে রাজি হয়েছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের কর্মকর্তারা এ কথা বলেছেন। তারা বলছেন, এর ফলে অঞ্চলটিতে দীর্ঘ সময় ধরে চলমান গৃহযুদ্ধ অবসানের উদ্যোগ নতুন গতি পাবে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ খবর জানিয়েছে।

গত কয়েক বছর ধরে ইয়েমেনে সংঘাতে লিপ্ত পরস্পরবিরোধী পক্ষকে সমর্থন ও সহযোগিতা করে আসছে ইরান ও সৌদি আরব। যুদ্ধে ইয়েমেনে মানবিক বিপর্যয় ও হাজারো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। শুধু তা ইয়েমেনে সীমাবদ্ধ থাকেনি। হুথিরা সৌদি আরবের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামরা চালিয়েছে।

মার্কিন ও সৌদি কর্মকর্তারা বলছেন, ইরান যদি হুথিদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তাহলে সংঘাত অবসানে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চাপে পড়বে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।

এই বিষয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি প্রতিনিধি দলের এক মুখপাত্র এই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। প্রকাশ্যে হুথিদের অস্ত্র সরবরাহের কথা সব সময় অস্বীকার করে আসছে তেহরান। তবে জাতিসংঘের পরিদর্শকরা হুথিদের একাধিক অস্ত্রের চালান ইরান থেকে আসা বলে শনাক্ত করেছেন।

সাত বছর পর কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন ও দূতাবাস চালু করতে সৌদি আরব ও ইরান ঘোষণা দেওয়ার পর উভয় দেশের কর্মকর্তারা বলেছেন, সৌদি আরবে হামলা না চালানোর জন্য হুথিদের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে তেহরান।

এক সৌদি কর্মকর্তা বলেছেন, সৌদি আরব প্রত্যাশা করছে হুথিদের ওপর জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে ইরান। অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে সৌদি আরবে হামলা ও ইয়েমেনে আরও ভূখণ্ড দখল হুথিদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

মার্কিন ও সৌদি কর্মকর্তারা বলছেন, ইরান দরকষাকষি বাদ দিয়ে দুই মাসের মধ্যে দূতাবাস চালুর উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে চান তারা।

এক মার্কিন কর্মকর্তার মতে, সৌদি-ইরান সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চুক্তিটি অদূর ভবিষ্যতে ইয়েমেনে একটি চুক্তির সম্ভাবনাকে জোরদার করেছে। ইয়েমেনে সংঘাত নিয়ে ইরানের আচরণ হবে গত সপ্তাহে স্বাক্ষরিত চুক্তির জন্য এক ধরনের পরীক্ষা।

ইয়েমেনবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত হান্স গ্রুন্ডবার্গ এই সপ্তাহের শুরুতে যুদ্ধ অবসানে ইরান ও পরে সৌদি আরব সফর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেনবিষয়ক বিশেষ দূত টিম লেন্ডার্কিং বুধবার রিয়াদে সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বন্ধ হয়ে যাওয়া শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরুর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন মার্কিন দূত।