দখলকৃত পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলে সংযুক্ত করার আহ্বান জানানোয় ইসরায়েলি সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে তুরস্ক। চলমান যুদ্ধবিরতি উদ্যোগের সময় এমন পদক্ষেপকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে তুরস্কসহ মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশ।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলি নেতাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারী সংযুক্তির আহ্বান স্পষ্টতই দখল স্থায়ী করার নীতির অংশ।
আঙ্কারা আরও বলেছে, এটি বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গ্রহণ করা সমাধাননীতিকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে।
বিবৃতিতে তুরস্ক পুনরায় পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে। এটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও পারস্পরিক আস্থার ভিত্তি হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন লিকুদ দলের ১৪ জন মন্ত্রী বুধবার এক চিঠিতে নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, আগামী ২৭ জুলাইয়ের মধ্যেই পার্লামেন্টের গ্রীষ্মকালীন অধিবেশন শেষ হওয়ার আগে জুডিয়া ও সামারিয়ায়—অর্থাৎ পশ্চিম তীরে, ইসরায়েলি প্রয়োগ করা হয়। চিঠিটি প্রকাশ করেছেন চরম ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ।
ইসরায়েলের এই ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সৌদি আরব, জর্ডান, মিসর ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
রামাল্লাভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, এই সংযুক্তির আহ্বান শুধু আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনই নয়, বরং পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরি হুমকি।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর থেকেই পশ্চিম তীর দখল করে রেখেছে। কিন্তু তারা দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের যে কোনও প্রয়াস প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরেও বসতি নির্মাণ ও ফিলিস্তিনি নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেছে। ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই সময় থেকে ইসরায়েলি বাহিনী ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হাতে পশ্চিম তীরে কমপক্ষে ৯৮৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।
গত বছরের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ইসরায়েলের দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছে এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে সব বসতি সরিয়ে নিতে আহ্বান জানিয়েছিল।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি