চুরি হওয়ার রিজার্ভ উদ্ধারে

নিউ ইয়র্ক ফেডের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ব্যাংক

nonameচুরি হওয়ার রিজার্ভ উদ্ধারে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। আগামী ১৫ জুলাই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাক করে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা ৯৫১ মিলিয়ন ডলার চুরির চেষ্টা করে। পরে বেশ কিছু পেমেন্ট বন্ধ করে দিয়ে বেশিরভাগ অর্থচুরি ঠেকানো গেলেও ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনে স্থানান্তরে সক্ষম হন হ্যাকাররা। ওই অর্থ ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার ব্রাঞ্চের চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।

রয়টার্স জানিয়েছে, সুইফটের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরির চার মাস পরও তদন্তের কোনও অগ্রগতি হয়নি। অপরাধীদের ধরতে তদন্তে অগ্রগতি শ্লথ হয়ে পড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক এখন চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারে নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ও ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতা চেয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান মোহাম্মদ রাজী হাসান আগামী ১৫ জুলাই নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

মে মাসে সুইজারল্যান্ডে নিউ ইয়র্ক ফেড, সুইফট ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠকের ধারাবাহিকতায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সুইজারল্যান্ডের বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সুইফট ও নিউ ইয়র্ক ফেড।

বৈঠকের প্রস্তুতির সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার বলেন, চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধার ছাড়াও ভবিষ্যতে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ জমা রাখার বিষয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, চুরি হওয়া রিজার্ভ উদ্ধার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। তবে সেখানে অন্যান্য বিষয়ও আলোচিত হবে। ফেডারেল ব্যাংকের আমাদের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আমরা তাদের গ্রাহক। অনেক কিছুই আছে আলোচনা করার মতো।

তবে বৈঠকে সুইফটের কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন কিনা তা জানাতে পারেননি ওই কর্মকর্তা। রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করেও সুইফটের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঘটনাটি তদন্তে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে মার্কিন গোয়েন্দা এফবিআই। যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা মনে করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাক অভ্যন্তরীণভাবেই হয়েছে। আর বাংলাদেশের তদন্তকারীরা এ ঘটনার জন্য আংশিকভাবে সুইফট সিস্টেমকে দায়ী করেছেন। কেবল বাংলাদেশ ব্যাংকই নয়, ভিয়েতনাম ও ইকুয়েডরের ব্যাংকেও একই স্টাইলে হামলা হওয়ায় সুইফটের নিরাপত্তার ইস্যুটি প্রশ্নবিদ্ধ হতে থাকে। কোনও কোনও তদন্তকারী আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার হামলার সঙ্গে ২০১৪ সালে সনি পিকচার্সে উত্তর কোরিয়ার সাইবার হামলার মিল পেয়েছেন। দুটি ঘটনাতেই একই ধরনের ম্যালওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছিল বলে দাবি তাদের।

তবে কারা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় জড়িত তার কোনও সুরাহা করতে পারেননি তদন্তকারীরা। সম্প্রতি এফবিআইও জানিয়েছে, দায়ীদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি। তবে দ্রুত শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলেও জানানো হয় সে সময়। সূত্র: রয়টার্স।

/এএ/