ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ত্রাণ পৌঁছানো শুরু হয়েছে। মার্কিন-নির্মিত ভাসমান বন্দর হয়ে শুক্রবার (১৭ মে) সেখানে যুক্তরাজ্যের পাঠানো একটি প্রাথমিক চিকিৎসার চালান পৌঁছেছে। অঞ্চলটিতে আরও ত্রাণ সরবরাহ প্রবেশের অনুমতি দিতে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েল। সেখানে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের যুদ্ধের কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
অস্থায়ী ভাসমান এই বন্দরটি ইসরায়েলের অ্যাশডোডে বন্দরের পূর্বে তৈরি করা হয়েছে। পরে বৃহস্পতিবার এটিকে গাজার তীরে স্থানান্তরিত হয়। গাজার নিজস্ব কোনও বন্দর অবকাঠামো নেই। কোনও মার্কিন সেনা উপকূলে যায়নি বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের অতিরিক্ত সহায়তা প্রদানের জন্য একটি চলমান ও বহুজাতিক প্রচেষ্টা এটি। এর আওতায় বেশ কয়েকটি দেশ এবং মানবিক সংস্থার ত্রাণ সামগ্রী প্রদান করা হবে।’
শুক্রবার জাতিসংঘের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, কয়েক মাস আলোচনার পর ‘ফ্লোটিং ডক’ বা ভাসমান বন্দরের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ এবং সমন্বয়ে সহায়তা করতে সম্মত হয় জাতিসংঘ। ‘মানবিক কার্যক্রমের নিরপেক্ষতা এবং স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখিয়ে’ এই্ উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি।
তবে ভাসমান এই বন্দর নির্মাণ নিয়ে গাজায় হামাস পরিচালিত সরকারি মিডিয়া অফিসের অভিযোগ, এই বন্দর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র তার ‘কুৎসিত ভাবমূর্তি উন্নত করার চেষ্টা করার’ চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘ, মানবিক গোষ্ঠী এবং খোদ যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হামাস বলেছে, মার্কিন-নির্মিত এই বন্দর দিয়ে আসা ত্রাণ গাজাবাসীর মানবিক চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। স্থলপথে সেখানে বৃহত্তর সাহায্যের চালান পাঠানোর দাবি করেছে তারা।
শুক্রবার হামাস বলেছে, ‘গাজায় নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অনাহার এবং অবরোধের ইচ্ছাকৃত এবং পূর্বপরিকল্পিত নীতির জন্য আমরা ইসরায়েলি দখলদার এবং মার্কিন প্রশাসনকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী করি।’
ভাসমান এই বন্দর দিয়ে সাইপ্রাস থেকে একটি সামুদ্রিক করিডোরের মাধ্যমে গাজায় ত্রাণ আসবে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের পরিদর্শন শেষেই সেগুলো গাজায় পৌঁছাবে।
বিষয়টির সাথে পরিচিত একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ভাসমান এই বন্দর দিয়ে ত্রাণ প্রবেশ কার্যক্রমের জন্য আনুমানিক ৩২ কোটি ডলার খরচ হবে। এই কার্যক্রমে দায়িত্বে থাকবেন ১ হাজার মার্কিন সেনা এবং একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা।