হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিতে ১০০ কোটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন

বিশ্বের একশো কোটিরও বেশি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস (ফোন, ট্যাব ও স্মার্ট টিভি) হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। অ্যান্ড্রয়েডের নিরাপত্তা আপডেটে এসব ডিভাইসকে আর সুরক্ষা না দেওয়ার ফলে এই ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। নজরদারি সংস্থা হুইচ? এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এই দুর্বলতার সুযোগে ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি, মুক্তিপণ দাবি ও অন্যান্য ম্যালওয়ার হামলা চালাতে পারে হ্যাকাররা।

PRC_94732480

হুইচ? জানিয়েছে, ২০১২ সালে বা এর আগে উন্মোচিত অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলো বিশেষ ঝুঁকিতে রয়েছে। এই অপারেটিং সিস্টেমের নির্মাতা কোম্পানি গুগল তাদেরকে এই ডিভাইসগুলোর সুরক্ষার বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। মন্তব্যের জন্য বিবিসি’র যোগাযোগেও সাড়া দেয়নি টেক জায়ান্ট গুগল ।

গুগলের নিজেদের পরিসংখ্যা অনুসারে, বিশ্বের অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৪২ দশমিক ১ শতাংশ তাদের ৬.০ সংস্করণ বা এর আগের সংস্করণ ব্যবহার করছেন।

অ্যান্ড্রয়েড সিকিউরিটি বুলেটিনের তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালে যে অ্যান্ড্রয়ড অপারেটিং সিস্টেম এসেছে তাতে ৭.০-এর আগের সংস্করণগুলোর জন্য কোনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়নি।

এই তথ্য বিশ্লেষণ করে হুইচ? উপসংহারে পৌঁছেছে যে, বিশ্বের প্রতি পাঁচজন অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর মধ্যে দুইজন কোনও নিরাপত্তা আপডেট পাচ্ছেন না। এরপর সংস্থাটি পাঁচটি ফোনে তা পরীক্ষা করে দেখে। এসব ফোনের মধ্যে রয়েছে মটোরোলা এক্স, স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৫, সনি এক্সপেরিয়া জেড২, এলজি/গুগল নেক্সাস ৫, স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৬।

এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে ভাইরাসবিরোধী গবেষণাগার এভি কম্পারেটিভসকে ম্যালওয়ারকে ফোনগুলোকে আক্রান্ত করতে বলা হয় হুইচ?’র পক্ষ থেকে। এক্ষেত্রে তারা প্রতিটি ফোনে হামলা চালাতে সক্ষম হয়। কয়েকটি ফোনে একাধিক হামলাও চালানো হয়।

পরীক্ষার প্রাপ্ত ফলাফল হুইচ? গুগলকে জানিয়েছে। কিন্তু কোম্পানিটি পুরনো অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেম ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।

কীভাবে যাচাই করবেন আপনার ফোন ঝুঁকিতে রয়েছে কিনা?

আপনার ফোন যদি দুই বছরের পুরনো হয় তাহলে যাচাই করে দেখুন নতুন অপারেটিং সিস্টেমে তা আপডেট করা যাবে কিনা। অ্যান্ড্রয়েড ৭.০ নওগাত ব্যবহারকারী হলে তা করার জন্য সেটিংস>সিস্টেম>অ্যাডভান্সড সিস্টেম আপডেট এ যেতে হবে।

যদি আপডেট করতে না পারেন তাহলে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকির মুখে রয়েছে আপনার ফোন। বিশেষ করে আপনি যদি অ্যান্ড্রয়েড ৪ বা এর পুরনো সংস্করণ ব্যবহার করে থাকেন। এক্ষেত্রে গুগল প্লে স্টোর ছাড়া অন্য উৎস থেকে অ্যাপস ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে সতর্ক হোন। এছাড়া এসএমএস ও এমএমএস বার্তার ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ফোনের তথ্য অন্তত দুটি স্থানে সংরক্ষণ করুন (একটিহার্ড ড্রাইভে এবং একটি ক্লাউড সেবায়)। একটি অ্যান্টি-ভাইরাস অ্যাপস ইন্সটল করুন। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে পুরনো ফোনের ক্ষেত্রে এই সুবিধাও সীমিত।