পশ্চিমাদের ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’ মোকাবিলায় রুশ কৌশল জানালেন ল্যাভরভ

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, পশ্চিমাদের ‘সর্বাত্মক হাইব্রিড যুদ্ধের’ লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে রাশিয়াকে। কিন্তু পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরও চীন, ভারত ও অন্য দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করে টিকে থাকবে রাশিয়া। শনিবার ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের ৮০তম দিনে তিনি এই মন্তব্য করেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।

ল্যাভরভ দাবি করেছেন, আক্রমনের জন্য অপরাধী হিসেবে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি, এগুলো আরোপ করা হয়েছে রাশিয়াকে লক্ষ্যবস্তু বানাতে।  

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পশ্চিমারা সমন্বিতভাবে সর্বাত্মক হাইব্রিড যুদ্ধ শুরু করেছে। এই যুদ্ধ কতদিন চলবে তা ধারণা করা মুশকিল। কিন্তু স্পষ্ট বিষয় হলো, এর পরিণতি সবাইকে ভোগ করতে হবে। কেউ বাদ যাবে না।

ল্যাভরভ বলেন, সরাসরি সংঘাত এড়ানোর জন্য সবকিছু করেছি আমরা। কিন্তু এখন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা অবশ্যই তা গ্রহণ করেছি। নিষেধাজ্ঞা আমাদের কাছে নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন রূপে ও বিভিন্ন উপায়ে সব সময় এসব জারি ছিল।  

২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর পর রাশিয়ার শীর্ষ কোম্পানি, ব্যাংক ও রাজনৈতিক অভিজাতদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের ফলে কয়েক হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে এবং ঘরবাড়ি হারিয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। জ্বালানির বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিতিশীলতা। বেড়েছে খাদ্যশস্য, রান্নার তেল ও সারের দাম।

বক্তব্যে ল্যাভরভ তুলে ধরেছেন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিরায় কীভাবে নিজের অর্থনীতিকে সচল ও অন্যত্র নতুন বাজার তৈরির চেষ্টা করছে।

রাশিয়ার ৬৪০ বিলিয়ন ডলার বিদেশির মুদ্রার রিজার্ভ আটকে দেওয়ার কথা তুলে ধরে ল্যাভরভ জানান, এতে প্রমাণিত হয় কেউ-ই রাষ্ট্রীয় দস্যুতা থেকে নিরাপদ নয় এবং বিভিন্ন দেশের সামনে প্রয়োজনীয়তা হাজির করছে অর্থনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে।

কোনও প্রমাণ ছাড়াই ল্যাভরভ দাবি করেন, শুধু রাশিয়া নয়, অনেক দেশ মার্কিন ডলার, পশ্চিমা প্রযুক্তি ও বাজারের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনছে।

তিনি বলেন, রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করতে পশ্চিমাদের উদ্যোগ ব্যর্থ হচ্ছে। চীনের সঙ্গে এখন রাশিয়ার ভালো সম্পর্ক রয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা হচ্ছে।

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য সফর করা ল্যাভরভ উল্লেখ করেছেন, মিসর, আলজেরিয়া, উপসাগরীয় দেশসহ এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন তিনি।