ভেনেজুয়েলার ১৪ টন সোনা ফেরত না দিতে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে চিঠি

যুক্তরাজ্যের ব্যাংক অব ইংল্যান্ডে গচ্ছিত ১৪ টন সোনা ফেরত পেতে যে চেষ্টা করছে ভেনেজুয়েলা তাতে ইতোমধ্যেই সামনে চলে এসেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওপর বলবৎ থাকা মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ। যুক্তরাজ্যের একজন রাজনীতিবিদ ওই নিষেধাজ্ঞার দোহাই দিয়ে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের কর্মকর্তাদের চিঠি লিখে আহ্বান জানিয়েছেন, ভেনেজুয়েলীয় কর্মকর্তাদের  সঙ্গে দেখা না করার এবং সোনা ফেরত না দেওয়ার। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দেখা করবেন কি না তা নিয়ে এখনও কিছু জানাননি ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের কর্মকর্তারা।2018-11-28T173728Z_1746921791_RC18AF45E4A0_RTRMADP_3_BC-PARTNERS-ACURIS-M-A

তেল উৎপাদনকারী পশ্চিম গোলার্ধের দেশগুলোর মধ্যে ভেনেজুয়েলার মজুতই সবচেয়ে বেশি। সোনার মজুতও বিপুল। তারপরও দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ। দেশটিতে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধের চরম সংকট চলছে। অনেক নাগরিকই অনাহারে থাকার কথা জানিয়েছেন। ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক অবস্থাও অস্থির। বিরোধীরা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জন্য সমাজতন্ত্রী দলের শাসনকে দায়ী করেছেন। গত বছর সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহত হয়েছে বহু বিরোধী দলীয় সমর্থক।

ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার কাছ থেকে সোনা কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জন্য দেশটি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ঋণও সংগ্রহ করতে পারছে না। বর্ধিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডে গচ্ছিত ১৪ টন সোনা খোয়াতে চায় না দেশটি। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড থেকে সেগুলো ফেরত আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাদুরো সরকার।

সোনা ফেরত আনার জন্য ভেনেজুয়েলার অর্থমন্ত্রী সিমন জেরপা এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কালিক্সতো ওরতেগা আগামী শুক্রবার ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। আর অর্থমন্ত্রী জেরপার বিরদ্ধেই রয়েছে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য অ্যান্ড্রু লিউয়ার ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, যে ব্যক্তির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তার সঙ্গে কর্মকর্তাদের দেখা করাই উচিত নয়।

তার পাঠানো চিঠির ভাষ্য, ‘ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের কর্মকর্তাদের জন্য এটি অযথার্থ যে তারা দুর্নীতির দায়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন এমন ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করবেন। এমনটা যদি ঘটে তাহলে তা ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য উভয়েরই সুনাম ক্ষুণ্ন করবে।’ ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য লিউয়ার আরও বলেছেন, সোনা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি শুধুমাত্র তখনই বিবেচনা করা উচিত যখন ভেনেজুয়েলার সংসদ সেটা অনুমোদন করবে। সংসদে এখন বিরোধীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের রাজনীতিবিদ লিউয়ারের ভাষ্য ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলীয় রাজনীতিবিদ জুলিও বোর্জেসের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি। তিনি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরোর সমালোচনা করে বলেছেন, ওই সোনা ফেরত দিলে তা দুর্নীতিতে ব্যবহৃত হবে।