যুক্তরাজ্যে স্কুলের পাঠ্যসূচিতে সমকামিতা, মুসলিম অভিভাবকদের প্রতিবাদ

যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামের একটি স্কুলে শিশুদের পাঠ্যসূচিতে সমকামিতার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন একদল ব্রিটিশ মুসলিম অভিভাবক। তাদের দাবি, পাঠ্যসূচিতে সমকামিতাবিষয়ক যে শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ধর্মীয় রীতিবিরোধী।

9046874-0-image-a-2_1548602977100

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতীয় বংশোদ্ভুত কয়েকশ অভিভাবক পার্কফিল্ড কমিউনিটি স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। স্কুলটিতে ‘আমাদের স্কুলে কোনও বহিরাগত নয়’ শিরোনামে একটি কর্মসূচি রয়েছে শিক্ষকদের সূচিতে। এতে যৌনতা ও সম্পর্ক বিষয়ে অধ্যয়ন রাখা হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো স্কুলের এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সমতা ও প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ধারণা দেওয়া। এতে বর্ণ, জাতি ও ধর্মের সমতার গুরুত্বকেও তুলে ধরা হবে।

অভিভাবকদের আশঙ্কা, এতে করে তাদের কোমলমতি শিশুদের বিপথে নেওয়া হতে পারে। বিশেষ করে এসব শিশুদের বয়স মাত্র ৪ থেকে ১২ বছর। যৌনতার বিষয় তাদের সামনে তুলে ধরার সময় এখনও হয়নি।

এক শিশুর অভিভাবক মরিয়ম আহমদ বলেন, এই বয়সে শিশুদের এসব শেখানো একেবারে ভুল। এই বয়সী শিশুরা এখনও বুঝতে শিখেনি তারা আসছে নাকি যাচ্ছে। তাদের নিজেকেই বুঝতে দিন তাদের যৌনগামিতা কী হবে।

স্কুল থেকে সন্তানকে সরিয়ে নেওয়া ফাতিমা শাহ বলেন, এটা একেবারে অনুপোযুক্ত, পুরোপুরি ভুল। শিশুদের বলা হচ্ছে সমকামী হওয়া ভুল কিছু না। অথচ স্কুলটির ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী মুসলিম। এটা একটি মুসলিম কমিউনিটি।

স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের পদক্ষেপ সঠিক বলেই মনে করছে। তাদের দাবি, এটা সমকামিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমতার প্রচার ও প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে নৈতিকতার অংশ। স্কুলটি এই বিষয়টি চালুকারী সহকারী প্রধান শিক্ষক অ্যান্ড্রিউ মোফাত বলেন, আমি একেবারে অল্প বয়স থেকেই শিশুদের শেখাচ্ছি যে, পৃথিবীতে অনেক ধরনের পরিবার রয়েছে। ভুলে গেলে চলবে না যে স্কুলের অনেক শিশুরই দুইজন মা রয়েছে। ফলে আমি বুঝতে পারি তারা কিছুই শিখছে না। শিশুরা দেখছে তাদের পরিবার সবকিছু মেনে নিচ্ছে।

মোফাত বলেন, তোমার কালো বা বাদামি কিংবা সাদা চামড়া থাকতে পারে। তুমি হতে পারো খ্রিস্টান, হিন্দু, শিখ, ইহুদি, বিশ্বাসহীন অথবা সমকামী। আমরা সবাই একসঙ্গে বাস করতে পারি এবং করছি। আমরা বার্মিংহামে বসবাসের কথা বলছি।

সহকারী প্রধান শিক্ষক স্কুলের সামাজিক স্বাস্থ্য শিক্ষার শিক্ষকও। সমকামী এই শিক্ষক ব্রিটিশ রানির এমবিই সম্মাননা পেয়েছেন শিক্ষায় সমতা নিয়ে কাজ করার কারণে। তিনি প্রাথমিক স্কুলে সমকামিতার প্রতিবন্ধকতা নিয়ে একটি বইও লিখেছেন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বইটির কিছু অংশ শিক্ষার্থীদের পাঠ করানো হয়। এসব পাঠে সমলিঙ্গের সম্পর্ক ও বিয়ের বিষয় গল্পাকারে তুলে ধরা হয়েছে।