ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে যুক্তরাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা

করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট যুক্তরাজ্যে সংক্রমণের আরেকটি ঢেউ নিয়ে আসতে পারে। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সরকারের উপদেষ্টা বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রিউ হেওয়ার্ড এই বিষয়ে সতর্কতা জানিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

ব্রিটেনের সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অব এমার্জেন্সিজ (এসএজিই)-এর অধ্যাপক অ্যান্ড্রিউ হেওয়ার্ড বলেন, ভাইরাস আগের চেয়ে দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে। যা ব্রিটেনে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরুর ইঙ্গিত হতে পারে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ হেওয়ার্ড বলেন, এটি পরিস্থিতিকে ভ্যাকসিন ও ভাইরাসের মধ্যে লড়াইয়ে নামিয়ে আনছে।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় আমরা দেখতে পাচ্ছি এই ভ্যারিয়েন্ট খুব কার্যকরভাবে ছড়াচ্ছে। যদিও এটি ভারত থেকে ভ্রমণের মাধ্যমে এখানে এসেছে। এটি প্রথমে বাসা-বাড়িতে ছড়ায়, এখন বড় পরিসরে কমিউনিটিতে ছড়াচ্ছে। ফলে দেশের অন্যান্য অংশে তা না ছড়ানোর কোনও কারণ দেখি না।
অধ্যাপক হেওয়ার্ড আরও বলেন, সংক্রমণ ঠেকাতে সম্ভাব্য সবকিছু অবশ্যই আমরা করছি। কিন্তু নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের আরও নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়ত শুরু করতে হবে।

বুধবার ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে তিনি জানান, বুধবার পর্যন্ত ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৯৬৭ জন। সোমবারের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি।

ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বেডফর্ড, বার্নলি, হউনস্লো, কিরক্লিস, লিচেস্টার ও নর্থ টাইনিসাইডে পরীক্ষা ও টিকাদান বাড়ানো হবে।

স্কটিশ সরকারও গ্লাসগো ও মোরেতে একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।

হেওয়ার্ড বলেন, সৌভাগ্যবশত আমাদের জনগণের বড় একটা অংশকে টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও উচ্চ ঝুঁকি গোষ্ঠীর মানুষ রয়েছেন যারা টিকা পাননি। ভ্যাকসিনও শতভাগ কার্যকর নয়। এমনকি তরুণরা যদি হাজারে হাজারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে শুরু করে তাহলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।

ব্রিটিশ অধ্যাপক ইঙ্গিত দেন, বিভিন্ন দেশের ভ্যারিয়েন্ট যাতে যুক্তরাজ্যে না ছড়ায় সেজন্য তিনি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পক্ষে।

প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ, যা মোট প্রাপ্ত বয়স্ক ব্রিটিশ জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ এরইমধ্যে করোনাভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছেন। সোমবার থেকে যুক্তরাজ্যে লকডাউন শিথিল হয়েছে। সবুজ তালিকাভুক্ত দেশগুলোতে মানুষ বিদেশ যেতে পারছেন। ২১ জুন সামাজিক যোগাযোগের সব আইনি বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করতে পারে ব্রিটেন।