যেভাবে হামলা চালানো হয় ফ্লোরিডার সেই নাইটক্লাবে

ফ্লোরিডার ওরলান্ডো শহরের পালস নাইটক্লাবে ভয়াবহ এ হত্যাযজ্ঞ ঘটে শনিবার গভীর রাত আনুমানিক ২টায়। জানালেন নগরীর পুলিশ প্রধান জন মিনা।

ক্লাবে তখন এক লাতিন অনুষ্ঠান চলছিল, প্রায় শেষ পর্যায়ে। এমন সময়ে সশস্ত্র এক ব্যক্তি  এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন। পরিস্থিতি দেখে ক্লাবের ফেসবুক পাতা থেকে এর অনুসারীদের উদ্দেশে জরুরি বার্তা পাঠানো হয়—  যে যেভাবে যেদিকে পারেন পালান!

ফ্লোরিডার নাইটক্লাবে হামলার শিকারদের একজন

মূলত সমকামীদের বিভিন্ন উৎসব উদযাপনধর্মী এ নাইটক্লাবে নিরাপত্তাবলয় ভেদ করে অংশগ্রহণকারীদের প্রবেশ করতে হয়। সেক্ষেত্রে সশস্ত্র অবস্থায় কী করে এই ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশ করলেন তা ভাবাচ্ছে ওরলান্ডো পুলিশকে।

পুলিশের বিশেষ সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আক্রমণকারী ব্যক্তি কোনও না কোনও উপায়ে সঙ্গে শরীরের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রটিকে বেঁধে ক্লাবে প্রবেশ করেন।

গোলাগুলি শুরু হওয়ার পর ওই ক্লাবে অবস্থানকারী এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গেও আক্রমণকারীর গুলিবিনিময় ঘটে। তবে পুলিশ বিভাগ নিশ্চিত নয়, ক্লাবের বাইরে নাকি ভেতরেই ঘটেছে ওই গুলিবিনিময়।

এসবের তিন ঘণ্টা পর ভোর ৫টার দিকে  নাইট ক্লাবের ভেতরকার পরিস্থিতি যখন রক্ত, মরদেহ আর আহতের আর্তনাদে নারকীয় রূপ নিয়েছে, পুলিশ তখন আক্রমণকারীর অবস্থান লক্ষ্য করে একটি সুনিয়ন্ত্রিত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।     

অভিযান শেষে আক্রমণকারীকে মৃত পাওয়া গেছে বলে জানায় পুলিশ। ক্লাবের ভেতরে ও বাইরে আক্রমণকারী ব্যক্তির গাড়ি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে যে বাহন তার ভেতর সন্দেহজনক বেশ কিছু বস্তু মেলে। আক্রমণকারীর পরিচয়ও প্রকাশিত হয়।

জানা যায়, লোকটির নাম ওমর মতিন (২৯)। যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা আফগান বংশোদ্ভূত এক তরুণ। বাড়ি দক্ষিণ ওরলান্ডোর সমীপবর্তী সেন্ট লুই কাউন্টির ফোর্ট পিয়ার্স শহরে।

ওমর মতিন

এফবিআইএর এক মুখপাত্র ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে জানায়, ওমর মতিন হামলা চালানোর কিছুক্ষণ আগে জরুরি বিভাগে ফোন করে তার পরিকল্পনার কথা জানান। এর সঙ্গে ইসলমিক স্টেটের সম্পৃক্ততা আছে বলেও ঘোষণা করেন।

এর কিছুক্ষণ পরই গুলিবর্ষণ করতে শুরু করে। ইসলামিক স্টেটের কথা বলে আক্রমণ শুরু করায় ওমর মতিনকে ওই দলটির সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হলেও এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি।

পুলিশ শোকের সঙ্গে ৫০ জনের মৃত্যুর ও ৫৩ জনের আহত হওয়ার খবর জানায়। পুলিশের ভাষ্য ১৯৯৯ এর পর এতো নৃশংস কোনও হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ঘটেনি।

সূত্র: বিবিসি

আরও পড়ুন: ফ্লোরিডায় নাইটক্লাবে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ 

আরও পড়ুন: কে এই ওমর মতিন?

/এইচকে/