ডেমোক্র্যাটদের ইমেইল হ্যাকিংয়ে ১২ রাশিয়ানকে অভিযুক্ত করলো যুক্তরাষ্ট্র

২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় ডেমোক্র্যাট দলের ইমেইল হ্যাকিংয়ের ঘটনায় রাশিয়ার ১২ জন নাগরিককে অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের ঘটনা তদন্তের অংশ হিসেবে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। শুক্রবার ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ আনার বিষয়টি ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রড রজেনস্টেইন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এখবর জানিয়েছে।

রড রজেনস্টেইন

রড রজেনস্টেইন বলেন, ইন্টারনেটের কারণে বিদেশিরা যুক্তরাষ্ট্রে নতুন ও অনাকাঙ্ক্ষিত উপায়ে হামলা চালাচ্ছে। নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে তারাই অপরাধী যারা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে।

ওয়াশিংটনে ১২জন রুশ নাগরিকের বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের এই অভিযোগ দায়ের করেছেন রবার্ট মুলার, যিনি মার্কি নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের ঘটনা তদন্তে বিশেষ কাউন্সেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এরই মধ্যে মুলারের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে।

রুশ নাগরিকদের বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের এই অভিযোগ এমন সময় ঘোষণা করা হলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ রানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। একই সঙ্গে ট্রাম্প সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রজেনস্টেইন জানিয়েছেন, ঘটনার অগ্রগতি সম্পর্কে ট্রাম্পকে অবহিত করা হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, অভিযুক্তরা রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা জিআরইউ’র সদস্য। তারা ট্রাম্পের প্রচারণার শিবিরের এক ব্যক্তিসহ কয়েকজন মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে যোগসাজশ করেছিল।

এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে রাশিয়ার ১৩ নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে দেশটির ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। এর মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে টেলিগ্রাম জালিয়াতি ও পাঁচজনের বিরুদ্ধে পরিচয় চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া তিনটি রাশিয়ান কোম্পানির বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করা হয়েছে।  

২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ছিল বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। অভিযোগ ওঠে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের ক্ষতি করার এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাবমূর্তি বড় করার চেষ্টা করে রাশিয়া। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল হ্যাক করে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে এফবিআই’র সাবেক পরিচালক রবার্ট মুলারের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়।  দীর্ঘদিন তদন্তের পর এই অভিযোগপত্র প্রকাশ করা হলো।  

নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণা দলও রাশিয়ান গুপ্তচরদের সঙ্গে আঁতাত করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। আর রাশিয়াও অভিযোগটিকে ভিত্তিহীন বলে নাকচ করে দিয়েছে।