মার্কিন লক্ষ্যবস্তুতে হামলার প্রশিক্ষণ নিচ্ছে চীনের সেনাবাহিনী

 

চীনের সামরিক বাহিনী প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্রদের ওপর হামলার প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের এক সতর্কবার্তায় এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসকে দেওয়া পেন্টাগনের এই বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূরবর্তী স্থানে বোমারু বিমান পাঠানোর সক্ষমতা দ্রুত বাড়ছে চীনের। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

4479

 

পেন্টাগনের প্রতিবেদনে চীনের সামরিক সামর্থ্য ও সক্ষমতা বৃদ্ধির কথা গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, চীনের প্রতিরক্ষা বরাদ্দ ১৯০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাজেটের এক-তৃতীয়াংশ।

এই প্রতিবেদনের বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

মার্কিন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত তিন বছরে চীনের পিপল’স লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) বোমারু বিমানগুলো নিজেদের উড্ডয়নের আওতা দ্রুত বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে মার্কিন ও মিত্রদের গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, চীনের বোমারু বিমানের এসব ফ্লাইটের মধ্য দিয়ে কী প্রমাণ করতে চাইছে তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। উল্লেখ করা হয়েছে, চীনের পিএলএ গুয়ামসহ পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে মার্কিন ও মিত্রশক্তির সামরিক ঘাঁটিতে হামলার সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। চীন দাবি করে আসছে, দেশটি পদাতিক বাহিনীকে উড্ডয়ন ও বিজয়ী হিসেবে রূপান্তর ঘটাচ্ছে।

পেন্টাগন জানিয়েছে, চীন শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে তাইওয়ানকে নিজেদের সঙ্গে একীভূত করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে যদি যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হস্তক্ষেপ করে তাহলে চীন কার্যকর মার্কিন হস্তক্ষেপে বিলম্ব সৃষ্টি করতে পারে এবং বড় ধরনের স্বল্প সময়ের যুদ্ধে জয়ী হতে চাইবে।

পেন্টাগনের এই সতর্কতা এমন সময় আসলো যখন পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের মাধ্যমে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ বাড়াচ্ছে চীন। গত বছরই এই অঞ্চলে চার বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয় দেশটি।

২০১৪ সালে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চতুর্থ বৃহৎ দাতা দেশ ছিল চীন। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও নিউজিল্যান্ডের পরই দেশটির অবস্থান ছিল। তবে বেইজিং তার সহায়তা বাড়িয়ে গেছে। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন দুনিয়াজুড়েই মার্কিন সহায়তার পরিমাণ কমিয়েছে। সব মিলিয়ে তহবিল ব্যয়ের পরিমাণের ভিত্তিতে ২০১৭ সালে এ অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহৎ দাতা দেশে পরিণত হয় চীন। একই বছর প্রতিশ্রুত অর্থ সাহায্যের হিসাবে বৃহত্তম দাতা দেশে পরিণত হয় দেশটি।