‘মধ্যপ্রাচ্য শান্তি’ পরিকল্পনা প্রকাশ করলেন ট্রাম্প

ফিলিস্তিনের বারবার প্রত্যাখ্যানের পরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা উন্মোচন করেছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে পাশে নিয়ে এই পরিকল্পনা তুলে ধরেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।

42bc3d41907e47448f53965ab2f1a749_18

উন্মোচনের সময় ট্রাম্প বলেন, শান্তির পথে ইসরায়েল আজ বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। আমার লক্ষ্য উভয়ের জন্য সমান সুযোগের সমাধান হাজির করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জানান, ইসরায়েলের নেতারা এই প্রস্তাবকে সমর্থন করবেন।

ট্রাম্প আরও বলেন, ফিলিস্তিনিরা দারিদ্র্যতা ও সহিংসতার মধ্যে বাস করছে। যারা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ ছড়াতে চায় তাদের দাবার ঘুটি হিসেবে তারা ব্যবহৃত হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন, এই প্রথমবারের মতো ইসরায়েল একটি ধারণামূলক মানচিত্র প্রকাশ করতে রাজি হয়েছে। শান্তি স্থাপনের জন্য নিজেদের ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে সম্মতও হয়েছে। তিনি বলেন, ইসরায়েল অনেক করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে একটি যৌথ কমিটি গঠন করব ধারণামূলক মানচিত্রের আরও বিস্তারিত ও নির্দিষ্ট করতে। যাতে করে দ্রুতই স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব হয়।

ট্রাম্প দাবি করেন, ওই মানচিত্রে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দ্বিগুণ হবে এবং পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনের রাজধানী থাকবে এবং যুক্তরাষ্ট্র গর্বের সঙ্গে সেখানে দূতাবাস চালু করবে। 

ইতোমধ্যে ফাঁস হওয়ার পরিকল্পনাটি প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিন। গোপনীয়তার মধ্যে  ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের তত্ত্বাবধানে খসড়াটি তৈরি করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বিরোধের সমাধান।

মঙ্গলবার গাজা উপত্যকায় কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি প্রতিবাদ করেছেন। দখলকৃত পশ্চিমতীরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে ইসরায়েল। রাতে প্রস্তাবটি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসবেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। শনিবার জরুরি বৈঠকে বসবে আরব লিগ।

পরিকল্পনাটি প্রকাশ উপলক্ষে সোমবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও বিরোধী দলীয় নেতা বেনি গান্তজ।  নেতানিয়াহু ওই দিন ট্রাম্পকে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে পরিকল্পনার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, শতাব্দীর সেরা চুক্তি হলো শতাব্দীর সেরা সুযোগ। আমরা তা এড়িয়ে যাব না।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, বুধবার প্রস্তাবটি নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কো যাবেন নেতানিয়াহু। 

উল্লেখ্য, ঐতিহাসিকভাবেই মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ইসরায়েল-ঘেঁষা। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী স্বীকৃতির ঘোষণা দেন। এর পরে ইসরায়েলের সঙ্গে আর কোনও শান্তি আলোচনায় মার্কিন মধ্যস্ততা মানবে না বলে ঘোষণা দেয় ফিলিস্তিনিরা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বারবারই ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি বা শতাব্দীর সেরা চুক্তি নামে পরিচিত একটি শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণার কথা বলা হয়েছে। ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও জামাতা জারেড কুশনার এই পরিকল্পনার নেপথ্যে কাজ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে এই পরিকল্পনার বিভিন্ন অংশ সংবাদমাধ্যমে উঠে আসলেও যুক্তরাষ্ট্র তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি।