করোনায় আক্রান্ত মার্কিন নারীর সুস্থ হওয়ার গল্প

যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের এক নারী নিজেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও সুস্থ হওয়ার পথে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন। ৩৭ বছরের এলিজাবেথ স্নেইডার তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে। তিনি সবাইকে পরামর্শ দিয়েছেন আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য।

Coronavirus-Elizabeth-Schneider_170cd82d0e1_medium

এই মার্কিন নারী মনে করেন, বাড়িতে একটি পার্টিতে তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কারণ কয়েক দিন পর ওই পার্টিতে উপস্থিত তিনিসহ কয়েকজন একই সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২২ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত পার্টির তিন দিন পর কর্মক্ষেত্রে তিনি অসুস্থবোধ শুরু করেন।

সিএনএন’র এরিন বার্নেটকে এলিজাবেথ বলেন, ক্লান্ত অনুভূতি, শরীর ও মাথায় ব্যথা এবং কিছুটা জ্বর অনুভব করায় বাসায় চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। কিছুক্ষণ ঘুমানোর পর জ্বর বেড়ে হয়ে যায় ১০১ ডিগ্রি। পরে যখন আবার শুতে যাই তখন জ্বর ছিল ১০৩ ডিগ্রি।

স্নেইডার জানান, তিনি মনে করেছিলেন এটি ফ্লু। তিনি ভাবেননি এটি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। কারণ লক্ষণগুলো মিলছিল না। কাশি ছিল না, শ্বাস কষ্ট ছিল না।

কিন্তু পার্টিতে আসা তার বেশ কয়েকজন বন্ধু যখন একই দিনে এবং প্রায় সন্ধ্যার একই সময়ে কাছাকাছি লক্ষণ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন এলিজাবেথের মনে হয়েছে তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মূলকেন্দ্র সিয়াটল। জানুয়ারিতে প্রথম আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১ হাজার ৬৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে আক্রান্ত ৪৫৭ ও মৃত্যু হওয়া ৪১ জন ওয়াশিংটনের।

শুক্রবার প্রকাশিত সিএনএন’র খবরে বলা হয়েছে, পরীক্ষায় এখন পর্যন্ত স্নেইডার ও তার বন্ধুদের শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েনি। চিকিৎসকরা বলছেন এটি ফ্লু। তবে পরীক্ষায় ফ্লুও ধরা পড়েনি।

স্নেইডার বলেন, আমরা সবাই হতাশ হয়ে পড়ি কারণ আমাদের করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করা হচ্ছে না বা চিকিৎসকরা পরীক্ষা করার জন্যও বলছেন না। তখন তার এক বন্ধু সিয়াটল ফ্লু গবেষণার কথা জানায়। সেখানে অংশগ্রহণকারীরা অনলাইনে নিবন্ধন করার পর নাক পরিষ্কার করার একটি সরঞ্জাম পাঠানো হয়। সম্প্রতি তারা করোনা ভাইরাস পরীক্ষা শুরু করেছে। এভাবেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা আমি জানতে পারি।  

ঘরে বসবাস, বিশ্রাস্ত ও নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ শুরুর করার পর থেকেই সুস্থ হতে শুরু করেন জানিয়ে স্নেইডার বলেন, আমি সবাইকে যে গুরুত্বপূর্ণ কথাটি বলতে চাই তা হলো, দয়া করে আতঙ্কিত হবে না। আপনি যদি স্বাস্থ্যবান হন, আপনি যদি তরুণ হন, অসুস্থ হলে আপনি যদি নিজের যত্ন নেন তাহলে আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। আর আমি এর জীবন্ত উদাহরণ।

স্নেইয়ারের বয়স ৩৭ হলেও তার স্বাস্থ্য ভালো। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, বয়স্ক বা যাদের স্বাস্থ্যজনিত জটিলতা রয়েছে যেমন, হৃদরোগ বা ডায়বেটিস তাদের জন্য কোভিড-১৯ প্রাণঘাতী হতে পারে।

আমেরিকান হেলথ কেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মার্ক পার্কিনসন সিএনএনকে বলেছেন, যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে তাতে বয়স্কদের জন্য কোভিড-১৯ একেবারে যথার্থ কিলিং মেশিন।