ট্রাম্পের অপসারণ চায় ব্যবসায়ীরাও

পার্লামেন্ট ভবনে সমর্থকদের তাণ্ডবের পর বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ হজার কোম্পানির প্রতিনিধিত্বকারী একটি গ্রুপের প্রধান। ট্রাম্পকে সরাতে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীক গোষ্ঠীটি। ট্রাম্পের নিজ প্রশাসনেও ওই সংশোধনী প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা চলছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভা যদি প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব পালনে অযোগ্য বলে বিবেচনা করে তাহলে তাকে সরিয়ে দিতে পারবে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই সংশোধনী প্রয়োগ করা হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তাকে সরিয়ে দিতে মন্ত্রিসভায় ভোটাভুটির নেতৃত্ব দেবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ম্যানুফাকচারার-এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও জে টিমনস বলেন, ক্ষমতায় থাকতে সহিংসতায় উস্কানি দিয়েছেন ট্রাম্প। আর কোনও নির্বাচিত নেতা যদি তাকে সমর্থন করেন তাহলে তিনিও তার সাংবিধানিক শপথ ভঙ্গ করবেন আর নৈরাজ্যের সমর্থনে গণতন্ত্র প্রত্যাখ্যান করবেন। তিনি ট্রাম্পকে অপসারণ করতে ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগের কথা বিবেচনা করতে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের প্রতি আহ্বান জানান।

ম্যানুফাকচারার অ্যাসোসিয়েশনের মতো কড়া ভাষায় না হলেও অন্য ব্যবসায়ীক গোষ্ঠীগুলোও পার্লামেন্ট ভবনে তাণ্ডবের নিন্দা জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি বড় কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের অ্যাসোসিয়েশন বিজনেস রাউন্ডটেবিল বলেছে, গণতান্ত্রিক নির্বাচনের বৈধ ফলাফল পাল্টে দেওয়ার বেআইনি চেষ্টা থেকেই ন্যাশনাল ক্যাপিটলে হামলা হয়েছে।

এছাড়া ইউএস চেম্বার অব কমার্সের এক বিবৃতিতেও ক্যাপিটল ভবনে হামলা বন্ধের আহ্বান জানায়।

উল্লেখ্য, গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয় অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা বুধবার কংগ্রেসের এক যৌথ অধিবেশনে বসেন। উভয় কক্ষের এই অধিবেশনে পপুলার ভোটের ভিত্তিতে ইলেকটোরাল কলেজের দেওয়া ভোটগুলো গোনা হয় এবং তা চূড়ান্তভাবে প্রত্যয়ন করা হয়। অধিবেশনের কয়েক ঘন্টা আগেই এর বিরোধিতা করে ওয়াশিংটনে জড়ো হন কয়েক হাজার ট্রাম্প সমর্থক, যাদের মধ্যে উগ্রপন্থি বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যরাও ছিলেন। সেই সমাবেশের বক্তব্যে নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দেন ট্রাম্প।

এরপরই বেশ কিছু ট্রাম্প সমর্থক পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে তাণ্ডব শুরু করে। নজিরবিহীন এই তাণ্ডবের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে চার জনে দাঁড়িয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত নিহতদের কারও পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।