মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক কর-কাটছাঁট এবং ব্যয় বৃদ্ধির বিলের তীব্র সমালোচনা করেছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সোমবার (৩০ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যারা এই বিলকে সমর্থন করেছেন—তাদের আগামী নির্বাচনে হারিয়ে দেওয়া হবে। যদিও তারা আগে সরকারী ব্যয় হ্রাসের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্পের সঙ্গে এ বিষয়ে বিরোধে জড়ানোর পর কয়েক সপ্তাহ চুপ ছিলেন মাস্ক। এরপর সিনেটে বিলটি উত্থাপিত হলে শনিবার পুনরায় আলোচনায় ফিরে আসেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বিলটিকে ‘পুরোপুরি উন্মাদ ও ধ্বংসাত্মক’ বলে আখ্যায়িত করেন।
সোমবার তিনি সমালোচনার মাত্রা আরও বাড়ান। তিনি বলেন, যেসব আইনপ্রণেতা ব্যয় কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন কিন্তু এখন এই বিলকে সমর্থন করছেন, তাদের লজ্জায় মাথা হেঁট করে রাখা উচিত!’
তিনি আরও বলেন, তারা আগামী বছর প্রাইমারিতে অবশ্যই পরাজিত হবে—এটাই হবে আমার জীবনের শেষ কাজ।’
টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী মাস্ক আবারও একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আহ্বান জানান। বলেন, যে বিলটির বিপুল ব্যয় প্রমাণ করে ‘আমরা একদলীয় দেশে বাস করছি—দ্য পার্কি পিগ পার্টি!!’
তিনি লেখেন, এখন সময় হয়েছে এমন একটি নতুন রাজনৈতিক দলের, যারা সত্যিকার অর্থে জনগণের কথা ভাবে।’
এই বিল নিয়ে মাস্কের সমালোচনা ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরিয়েছে। অথচ এর আগে এই ধনকুবের ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচন প্রচারণায় প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিলেন। এছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের বিতর্কিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’র নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যা ছিল একটি ফেডারেল ব্যয় হ্রাস প্রকল্প।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মাস্ক দাবি করেছেন, এই নতুন আইন জাতীয় ঋণ ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেবে এবং ওই প্রকল্পের মাধ্যমে যে সাশ্রয় তিনি করেছিলেন, তা মুছে দেবে।
তবে মাস্ক কংগ্রেসে আসলে কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন, কিংবা তার মন্তব্য এই বিল পাসে কতটা প্রভাব ফেলবে—তা এখনও স্পষ্ট নয়। রিপাবলিকানরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের এই অনিয়মিত দ্বন্দ্ব ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী কংগ্রেস নির্বাচনে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রক্ষার সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
এই ফাটলের কারণে টেসলার শেয়ারেও ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। কোম্পানিটি বাজারমূল্য থেকে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে তা কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়েছে।