গ্রাউন্ড জিরো: কারও কাছে সেলফি তোলার জায়গা, কারও কাছে কবরস্থান

২০ বছর আগে টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলায় নড়েচড়ে বসে বিশ্ব। হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের স্থানটি এখন পরিচিত গ্রাউন্ড জিরো নামে। স্মৃতিশালাটির এখন নিয়মিত রুটিনও রয়েছে। যা আর দশটি পর্যটন কেন্দ্র থেকে খুব আলাদা কিছু নয়। আবার কারো কাছে তা পবিত্র কবরস্থান।

সারা বিশ্ব থেকেই পর্যটকেরা সেখানে নিয়মিত যান। সেলফি তোলেন, স্মৃতিশালার দেয়ালে খোদাই করা প্রায় তিন হাজার নিহত মানুষের নাম পড়েন। আবার সময় পেরিয়ে গেলে সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

কিন্তু ওই স্মৃতিশালার কাছে যারা বসবাস কিংবা কাজ করেন তাদের দৈনিক রুটিনের সঙ্গে মিশে আছে এটি। দেয়ালে ব্রোঞ্জে খোদাই করা নাম আর রিফ্লেক্টিং পুলের ৫৫ হাজার গ্যালন পানির ছবি তাদের কাছে কেবল সোস্যাল মিডিয়ার একটি পোস্ট নয়। এগুলো প্রতিনিয়ত তাদের স্মরণ করিয়ে দেয় সেই দিনটি। তাদের কাছে এটা এক কবরস্থান।

প্রতি সন্ধ্যায় যখন স্মৃতিশালায় পর্যটকের ভিড় কমে যায় তখন কাজ শুরু কেভিন হ্যানসেনের। হাতে গ্লোবস পরে টর্চ নিয়ে তিনি নেমে পড়েন প্রাত্যহিক সংস্কার আর পরিষ্কারের কাজে। ২০০১ সালে যখন হামলার ঘটনা ঘটে সেদিন আট বছরের হ্যানসেন লং আইল্যান্ডের একটি স্কুলে পড়ছিলেন।

কেভিন হ্যানসেন বলেন, ‘সবাই ফোন কল পাচ্ছিলো। শিক্ষকেরাও জানতো না কী হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর বাবা-মায়েরা স্কুলে গিয়ে তাদের সন্তানদের নিয়ে যায়।’ বর্তমানে নিজের কাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’ হ্যানসেন বলেন, ‘এটা একটা প্রতীক যা আমাদের সকলকে ২০০১ সালে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। আমাকে দেশপ্রেম যোগায় আর এই ঘটনা ভুলে যাওয়ার নয়। আমার বিশ্বাস এই জায়গাটিতে মানুষ দেখতে আসে যে পৃথিবীতে শয়তান আছে কিন্তু তাদের পরাজিত করা যায়।’

২৫ বছর ধরে নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কাজ করছেন মাইক ডাফহার্টি। টুইন টাওয়ারে যখন বিমান বিধ্বস্ত হয় তখন ব্রুকলিন এলাকায় টহলে ছিলেন তিনি। আর এখন তিনি যেসময় স্মৃতিশালা এলাকায় টহল দেন তখন তার মনে অনেক স্মৃতিই জেগে ওঠে। তিনি জানান, মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি।

সূত্র: এপি