গণটিকাদান কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি উধাও!

দেশজুড়ে আজ গণটিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন চলছে। গতকাল (৭ আগস্ট) থেকে পঞ্চাশোর্ধ্ব জনগোষ্ঠী, নারী, শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়।

এই ক্যাম্পেইনের আওতায় সারাদেশে চার হাজার ৬০০টি ইউনিয়ন, এক হাজার ৫৪টি পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন এলাকার ৪৩৩টি ওয়ার্ডে ৩২ হাজার ৭০৬ জন টিকাদানকারী এবং ৪৮ হাজার ৪৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে একযোগে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু সারাদেশ থেকে বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, টিকাকেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না।

বাংলা ট্রিবিউনের ফটো সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন আজ রবিবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের হাজী আব্দুল আউয়াল উচ্চবিদ্যালয় টিকাকেন্দ্রে যান পেশাগত কাজে।

সাজ্জাদ হোসেন জানান, এই দুই কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু মানানো যায়নি। মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকেও স্বাস্থ্যবিধি মানানো যায়নি। এই কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা অনেকে জানান, তারা কেউ কেউ ভোর পাঁচটা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন।

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, যারা স্বাস্থ্যবিধি মানানোর দায়িত্বে ছিলেন তাদের তুলনায় টিকা নিতে আসা মানুষ ছিল অনেক বেশি। মানুষের তুলনায় জায়গাও ছিল কম। সঙ্গে বৃষ্টি। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানাই ছিল দায়।

আবার দুই জায়গাতেই অনেক মানুষ টিকা নিতে এসে না পেয়ে ফিরে গেছেন।

গণটিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিটিতে ৩০০ থেকে ৩৫০ ডোজ টিকা দেওয়া হচ্ছে। জনসমাগম হচ্ছে চার-পাঁচগুণ বেশি। সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে না। এতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে কিনা প্রশ্নে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা বারবার সবার কাছে অনুরোধ করেছি, এসএমএস পাওয়ার পর টিকাকেন্দ্রে আসতে। তা হলে অহেতুক জনসমাগম বন্ধ রাখা সম্ভব।

নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মনে করি নাগরিক হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব আছে। আমরা যদি অযথা ভিড় না করি, এসএমএস পেয়ে টিকা দিতে যাই তবে জনসমাগম একেবারেই কমে আসে। প্রশাসনের সঙ্গে যারা কাজ করছেন তাদের সহযোগিতা নিয়ে আশা করি এ সমস্যার সমাধান করতে পারবো।’

স্বাস্থ্যবিধি না মানাতে পারলে টিকাকেন্দ্রগুলোতে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তাতে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থেকে যায় বলে মন্তব্য করেছেন কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরার্মশক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম।

বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘এসব বিবেচনায় নিলেই হতো। কিন্তু সেটা করা হয়নি। মানুষকেও আটকানো যাচ্ছে না। এখন যে অবস্থা তাতে ভয় হচ্ছে, এটা সামাল দিতে কতটুকু সক্ষম হবো আমরা?