সাত দফা দাবিতে ঢাকায় নার্সিং শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

২০ হাজার টাকা ইন্টার্নশিপ ভাতা, স্বতন্ত্র ক্যারিয়ার পাথ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগসহ সাত দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি শুরু করেছেন ঢাকা নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। চলমান কর্মসূচির আওতায় রবিবার (৪ মে) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় শতাধিক শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে কারিকুলামের অব্যবস্থাপনা, অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ এবং পেশাগত স্বীকৃতির অভাবে তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। বিশেষ করে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে হঠাৎ তা বাতিল বা পেছানো শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের শাটডাউন কর্মসূচি চলবে। প্রয়োজনে তারা জাতীয় পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচিতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এর আগে গতকাল (শনিবার) সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ঢাকা নার্সিং কলেজ শাটডাউন কর্মসূচি চলাকালে নার্সিং শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। 

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা নার্সিং কলেজের স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সভাপতি মহিব উল্যাহ। এ সময় ঢাকা নার্সিং কলেজের ছাত্র হল সভাপতি মো. আজিজুর রহমান রিফাতসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা জানান, সাত দফা দাবিতে জুলাই অভ্যুত্থানের পর গত ২১ আগস্ট থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে স্মারকলিপি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকার কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আজ (রবিবার) প্রধান উপদেষ্টার কাছে আরেকটি স্মারকলিপি দেওয়া হবে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শুধু ৩০-৪০ বছরের অভিজ্ঞতার নামে হাসপাতাল থেকে তুলে এনে সরাসরি প্রভাষক হিসেবে পদায়ন করে নার্সিং শিক্ষাকে সার্কাসে পরিণত করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতরা ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০১৬ সালের নার্সিং নিয়োগ বিধি, স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইয়েড কলেজগুলোর নীতিমালা ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শুধু পেশিশক্তি ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে পেশাকে জিম্মি করে রেখেছে।

বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো— বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ, গ্র্যাজুয়েট নার্সদের সরাসরি প্রথম শ্রেণির নিয়োগ, বিএসসি নার্সদের জন্য স্বতন্ত্র অর্গানোগ্রাম ও ক্যারিয়ার প্ল্যান প্রণয়ন, ২০১৬ সালের নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন, সার্বজনীন ইন্টার্ন ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীতকরণ ও সারা দেশে চলমান প্রাইভেট কলেজ ইনস্টিটিউটগুলোর জন্য সার্বজনীন নীতিমালা প্রণয়ন।  

এ ছাড়া ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নার্সিং (বিএসএন) চালুকরণ ও সমমান ডিগ্রিধারীদের স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করিয়ে বিএসসি সমমান করা এবং ২০১৮ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত নিম্নমানের কারিকুলামের অধীনে বিএসসি ইন নার্সিংয়ে অধ্যয়নরত সবাইকে ২০০৮ সালের কারিকুলামের সঙ্গে একত্রিত করার দাবিও জানানো হয়।