১৯৮৮ সালের লালদীঘি গণহত্যা

পুলিশের গুলির মামলায় সাক্ষ্য দিলেন গণপূর্তমন্ত্রী

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন১৯৮৮ সালে চট্টগ্রামের লালদীঘিতে শেখ হাসিনার সমাবেশে চালানো পুলিশের গুলির মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। লালদীঘি ময়দানের ২৪ জানুয়ারির এ ঘটনায় কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছিলেন। রবিবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মীর রুহুল আমিনের আদালতে মামলার ৩৭তম সাক্ষী হিসেবে মন্ত্রী সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন।
মামলার সাক্ষ্যে মন্ত্রী বলেন, ওইদিন পুলিশ পাখির মতো গুলি চালিয়েছে। শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই গুলি চালানো হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সেদিন লালদীঘির পাড়ের সমাবেশে যোগ দিতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ট্রাকে করে রওনা দিয়েছিলেন। আমিও ছিলাম সেই ট্রাকে। কোতোয়ালি মোড়ে আসার পর পুলিশ গুলি চালায়।
তিনি আরও বলেন, আমি সেদিন নেত্রীর সাহস দেখেছিলাম। আইনজীবীরা নেত্রীকে স্কট করে আদালত ভবনে নিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। ওইদিন ২৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। পুলিশ নিহত হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম নির্বিশেষে সবাইকেই পুড়িয়ে ফেলেছিল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মেজবাহ উদ্দিন জানান, তিন মাস আগে মামলাটি বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তর হয়ে এলে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ, ড. অনুপম সেনসহ ছয়জনের নামে সমন জারি করে আদালত। এর ধারাবাহিকতায় প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন গত ২৬ মে এ মামলায় সাক্ষ্য দেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী শহীদুল হুদা বাদী হয়ে এ ঘটনায় তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদাকে প্রধান আসামি করে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ১৯৯৮ সালের ১৪ মে সহকারী পুলিশ কমিশনার হাফিজ উদ্দিন দেওয়ান ৪৭ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। যদিও মামলার আসামিদের অনেকেই ইতোমধ্যে মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় নগরীর লালদীঘি ময়দানে সমাবেশে যাওয়ার পথে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালালে ২৪ জন নিহত হন। আহত হন কমপক্ষে দুই শতাধিক মানুষ।

আরও পড়ুন:

/এমও/এএইচ/