আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, সম্প্রতি গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর চারটি আস্তানার সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঝিনাইদহের সোনালীপাড়ার আস্তানায় থাকতো গুলশান হামলায় জড়িত নিবরাস এবং শোলাকিয়ায় হামলায় জড়িত আবির ও তাদের সহযোগীরা। এছাড়া শোলাকিয়ায় হামলার আগে কিশোরগঞ্জের নীলগঞ্জ রোডের একটি বাসায় আস্তানা গাড়ে জঙ্গিরা। এর বাইরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে আস্তানা গেড়েছিলো তারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, জঙ্গিরা ঢাকার গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলা চালানোর জন্য মাস দুয়েক আগেই পরিকল্পনা করে। এ কারণে গত মে মাসে মাসিক ২২ হাজার টাকায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ই ব্লকের ৬ নম্বর সড়কের টেনামেন্ট-৩ এর এ-৬ ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়। ওই মাসের ২৩ তারিখে স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে এক জঙ্গি পরিবার ওই ফ্ল্যাটে ওঠে। প্রায় একই সময়ে শেওড়াপাড়ার ৪৪১/৮ নম্বর বাসার নিচতলায় ছাত্র পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেয় তিন জঙ্গি।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশের ওই সূত্র জানায়, রাজধানী ও এর উপকণ্ঠে আরও একাধিক জঙ্গি আস্তানার গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেছে। কিছু কিছু আস্তানায় গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘জঙ্গিরা এক স্থানে বেশিদিন থাকে না। ঘন ঘন আস্তানা বদলায়, যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দেওয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি হামলায় জড়িত জঙ্গিরাও একাধিক আস্তানায় অবস্থান করে হামলা পরিচালনা করেছে।’
গত শনিবার বিকেলে ও মধ্যরাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্য জিয়াউদ্দিন আহসান, তার ভাগ্নে আলম চৌধুরী, ভবনের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুবুর রহমান তুহিন ও মিরপুরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নূরুল ইসলামকে আটক করা হয়। এই দুই বাসা থেকে কার্টনভর্তি বালি, গ্রেনেড, কালো পোশাকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
কাউন্টার টেরোরিজমের কর্মকর্তারা জানান, আটক ব্যক্তিদের গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা কেন ভাড়া দেওয়ার আগে পুলিশের পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী ভাড়াটিয়ার ছবি ও তথ্যসহ ফরম সংগ্রহ করেননি তা জানার চেষ্টা চলছে। এটা ইচ্ছাকৃতভাবে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়ার জন্য কি না তাও যাচাই করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘বাড়ির মালিকসহ যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে জঙ্গিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা চলছে। এমনকি জঙ্গির মুখাবয়বের বর্ণনা সংগ্রহসহ অন্যান্য বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
/এজে/