কল্যাণপুরের আস্তানায় পুলিশের অভিযানের আগে জঙ্গিরা কথিত আইএসের বেশে কালো পোশাক পরে ছবি তুলেছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা ওই আস্তানা থেকে উদ্ধারকৃত আলামতের মধ্যে কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে এসব উদ্ধার করেছেন বলে তারা দাবি করেন। তারা জানান, জঙ্গিরা ওই আস্তানায় জড়ো হয়েছিল বড় ধরনের কোনও হামলার পরিকল্পনা নিয়ে। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জিম্মি ঘটনার পর আইএসের আমাক এজেন্সি যে ছবি প্রকাশ করেছিল এসব ছবিও একই।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, জঙ্গিরা জেএমবির সদস্য হলেও তারা আইএসের আদর্শের অনুসারী। এ কারণে তারা আইএসের পতাকা পেছনে রেখে ছবিগুলো তুলেছিল। তারা নতুন কোনও বড় ধরনের নাশকতার আগে কোনও মাধ্যমে তা আইএসের কাছে পাঠাতো বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, অভিযানের আগে জঙ্গিরা তাদের কিছু ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ভেঙে ফেলে। যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব ডিভাইস থেকে কোনও গোপন তথ্য উদ্ধার করতে না পারে।
তবে অভিযানের পর পুলিশ দুটি পেনড্রাইভ উদ্ধার করে। ওই পেনড্রাইভের ভেতরেই ছবিগুলো সংরক্ষিত ছিল। কাউন্টার টেররিজমের কর্মকর্তাদের ধারণা, ছবিগুলো কয়েক দিন আগে তারা তুলেছিল। সেগুলো পেনড্রাইভে সংরক্ষিত করে কোনও মাধ্যমে তা আইএসের আমাক ম্যাগাজিনের কোনও প্রতিনিধির কাছে পাঠানো হতো।
আইএসের পোশাক পরিহিত ছবির পাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা অনেক কিছুই পেয়েছি। এর মধ্যে ছবিও রয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই চলছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের তাজ মঞ্জিলে অভিযান চালিয়ে একটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। জঙ্গিরা পুলিশকে প্রতিরোধ করলে রাত শেষে ভোর ৫ টা ৫১ মিনিটে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াতের নেতৃত্বে এক ঘণ্টার অভিযান চালানো হয়। এতে আস্তানায় ৯ জঙ্গি নিহত হয়। এছাড়া, পালিয়ে যাওয়ার সময় রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান নামে একজনকে আহত অবস্থায় গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্য একজন পালিয়ে যায়। নিহত ৯ জঙ্গির মধ্যে ৮ জনের পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তারা হলো দিনাজপুরের আব্দুল্লাহ ওরফে মোতালেব, টাঙ্গাইলের আবু হাকিম ওরফে নাইম, ঢাকা ধানমণ্ডির তাজ-উল-রাশিক, গুলশানের আকিফুজ্জামান, সাতক্ষীরা মতিয়ার রহমান, নোয়াখালীর জোবায়ের হোসেন, ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাজাদ রউফ ওরফে অর্ক ও রংপুরের রায়হান কবির ওরফে তারেক। নিহত অপর একজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
/এমএনএইচ/