যে নামে না.গঞ্জে বাসাভাড়া নেয় জঙ্গিরা

নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার বাড়িনারায়ণগঞ্জে পাইপাড়ায় আসল নাম গোপন করে মুরাদ ও রনি নামে দুই জঙ্গি বাসাভাড়া নিয়েছিল।ওই বাসায় আরও ৭/৮ জন জঙ্গির আসা-যাওয়া ছিল। তারা জিহাদি কথাবার্তা বলে পরস্পরকে উদ্বুদ্ধ করত এবং আর্থিক সহায়তা দিতো। পুলিশের দায়ের করা মামলার এজাহার থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা দেখা যায়, একমাস পূর্বে ৪১০/১ এসএস রোড সংলগ্ন নুরুদ্দিন দেওয়ানের বাড়ির তৃতীয় তলার উত্তর-পূর্ব পার্শ্বের ফ্ল্যাট ভাড়া নেয় জঙ্গিরা। ওই বাসায় নিহত জঙ্গি তামিম চৌধুরী, তাওসিফ হোসেন ও ফজলে রাব্বিসহ আরও ৪/৫ জন অজ্ঞাতনামা জঙ্গি বসবাস করত। এছাড়া আরও ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামা জঙ্গি আসা-যাওয়া, ধর্মীয় ও জিহাদি কথাবার্তা বলে উদ্বুদ্ধ করত এবং আর্থিক সহায়তা করত। নিহত জঙ্গিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সমর্থকপুষ্ট। অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মী সমর্থকদের অর্থ, অস্ত্র, গোলা-বারুদ ও বিস্ফোরক দ্রব্যাদি হেফাজতে রেখে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা, প্ররোচনা করায় এবং তাদের নিকট অস্ত্র গোলা-বারুদ ও বিস্ফোরক রাখার দায়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ (সংশোধনী/২০১৩) এর ৬(২/৮/৯/১০/১২/১৩) ধারায় অপরাধ করছে।

শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের পাইপাড়ার জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নব্য জেএমবির মাস্টারমাইন্ড তামিম আহমেদ চৌধুরী, তাওসিফ হোসেন ও ফজলে রাব্বি নিহত হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার নেপথ্যে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। জেএমবি’র ভগ্নাংশ অংশটির নেতৃত্বে সে ছিল। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত্ব কানাডিয়ান নাগরিক তামিম চৌধুরী গত দুইবছর আগে বাংলাদেশে এসে গাঢাকা দিয়ে এসব হামলার নেতৃত্ব দেয়। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়ার বিয়ানীবাজার। তবে তার পরিবারের সেখানে কেউ থাকে না।

পুলিশ ধারণা করছে, তাওসিফ ও ফজলে রাব্বি বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল। এমনকি অন্য কেউও নিতে পারে। তবে বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় এখনও এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি পুলিশ।

তাওসিফ গত ৩ ফেব্রুয়ারি ধানমণ্ডির বাসা থেকে পরিবারকে কিছু না বলে চলে যায়। এই ঘটনায় তার বাবা ডা. আজমল হোসেন ধানমণ্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় থেকে যে জঙ্গি পালিয়েছিল, তাকেই তাওসিফ বলে পুলিশ মনে করছে।

গত মাসে যশোর পুলিশ জঙ্গি সন্দেহে যে পাঁচজনের ছবি ও নামসহ পোস্টার ছাপে। রাব্বির নাম ও ছবি ওই তালিকায় দুই নম্বরে ছিল। রাব্বি যশোর এমএম কলেজে পদার্থবিদ্যা (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। গত ৫ এপ্রিল তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তার বাবা কাজী হাবিবুল্লাহ যশোর উপশহর ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ। ছেলে নিখোঁজের ব্যাপারে গত ৭ এপ্রিয় যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন তিনি। ছেলের ফিরে আসার আকুতি জানিয়ে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপনও দিয়েছিলেন।

এই ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক তদন্ত করছেন।

নারায়ণগঞ্জের সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান সোমবার বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মামলাটি এখনও আমরাই তদন্ত করছি। অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অজ্ঞাতনামা যেসব জঙ্গি ওই বাড়িতে আসতেন তাদেরও খোঁজা হচ্ছে।’

/এমএনএইচ/