আজিমপুরের জঙ্গি করিমের কিশোর ছেলে ৩ দিনের রিমান্ডে

নিহত জঙ্গি করিমরাজধানীর আজিমপুরে জঙ্গিদের আস্তানায় অভিযান চালানোর সময় নিহত জঙ্গি তানভীর কাদেরী ওরফে আব্দুল করিমের ১৪ বছর বয়সী ছেলেকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার  তদন্তকারী কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।  শুনানি শেষে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ ও শিশু আদালতের বিচারক রুহুল আমিন এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সহকারী কমিশনার (এসি) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আহসানুল হক ওই কিশোরকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ড চান।

রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ‘কিশোরটি জেএমবি সদস্য। ঘটনার দিন পুলিশ ওই জঙ্গি আস্তানার একটি কক্ষে ঢোকে। এ সময় সে দরজা আটকে দিয়েছিল। পুলিশ দরজা খুলে ভেতরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ওই কিশোর পুলিশের ওপর ছুরি হাতে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তবে পুলিশ তাকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তার পরিবারের সবাই জেএমবির সদস্য। ওই বাসায় যাতায়াতকারী আরও কয়েকজন অজ্ঞাত পরিচয় নারী-পুরুষের বিষয়ে সে প্রাথমিক তথ্য দিয়েছে। জঙ্গি সংগঠনের আস্তানার সন্ধান, জঙ্গিদের নাম ঠিকানা জানতে বিভিন্ন স্থানে তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য দশ দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।’

আদালত শুনানি শেষে  ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতে জঙ্গি করিমের ছেলের পক্ষে কোনও আইনজীবী ছিলেন না।

আজিমপুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এই কিশোর ৫ নম্বর আসামি। জঙ্গি আস্তানা থেকে আটকের পর  সে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের হেফাজতে ছিল।

এজাহারে বলা হয়েছে, ‘বাসার ভেতরে ঢোকার পর একটি কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়।এমতাবস্থায় পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় সোয়াট টিমকে খবর দেওয়া হয়। সোয়াট টিমের সদস্যরা ওই কক্ষের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং আট বছর বয়সী দু’টি শিশুকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠান।’

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ‘জঙ্গি করিমের  কিশোর ছেলে কেন তাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল এবং সে প্রকৃতই বাবা-মায়ের মতো জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ  কিনা, তা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে।’

আদালত সূত্র জানায়, কিশোরটির একটি জমজ ভাই রয়েছে। তবে ওই জঙ্গি আস্তানায় তাকে পাওয়া যায়নি।পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই জমজ ভাইকে ‘জিহাদে’র পথে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সিটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। সে এখন কোথায় আছে তা জানার চেষ্টা চলছে।

তদন্ত সূত্র জানায়, কিশোরটি ধানমন্ডির একটি স্কুলের ক্লাস ‘এইট’ -এর ছাত্র ছিল। তবে সে গত কয়েক মাস ধরে স্কুলে অনিয়মিত ছিল। বাবা-মা দু’জনই জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার কারণে জমজ দুই ছেলেকেও মোটিভেট করে জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) রাতে লালবাগ থানাধীন আজিমপুরের ২০৯/৫  পিলখানা রোডের একটি ছয় তলা আবাসিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পরে ওই বাসা থেকে এক জঙ্গির মৃতদেহ,আহত তিন নারী জঙ্গি ও নিহত জঙ্গি করিমের  এই কিশোর ছেলেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

 আরও পড়ুন: জঙ্গি করিমের মরদেহের ছবি প্রকাশ

এসআইটি/এআরআর/এমএনএইচ/