ডম-ইনোর চেয়ারম্যান-এমডির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

আদালতবিশ্বাসভঙ্গ ও হয়রানির মামলায় ডম-ইনো রিয়েল এস্টেটের চেয়ারম্যান রিজোয়ানা ইসলাম ও এমডি আবদুস সালামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। রবিবার ঢাকার মহানগর হাকিম মাহমুদুল হাসানের আদালত থেকে এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মাহমুদুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান।
এর আগে গত ১০অক্টোবর (সোমবার) এ মামলায় দুই আসামি আদালতে হাজির না হওয়ায় একই বিচারক তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
এ বিষয়ে ডম-ইনো গ্রুপের আইন কর্মকর্তা আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ কোনও কিছু বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
মামলার আরজি থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৪ মার্চ বাদী শামসুদ্দিন ডম-ইনো রিয়েল এস্টেটের সঙ্গে বাড়ি তৈরির চুক্তি করেন। চুক্তিতে বলা হয় বাদীর বনানীর জমিতে ডম-ইনো রিয়েল এস্টেট বাড়ি তৈরি করবে। ওই বাড়ি ডম-ইনো রিয়েল এস্টেট ৫০ ভাগ নেবে বাকিটা জমির মালিক নেবেন।
ডম-ইনো যথাসময়ে বাড়ি বুঝিয়ে দিতে না পারলে বাদীকে বাড়ি ভাড়াবাবদ প্রতিমাসে ১০ লাখ টাকা করে ভাড়া দেবে। ওই চুক্তি অনুযায়ী ২০১০ সালের ১৪ জুলাই বাদী জমি খালি করে দেন। ডম-ইনো বাড়ি তৈরির জন্য সে জমি যথাসময়ে বুঝে নেয়। চুক্তি অনুসারে ডম-ইনো ২০১৩ সালের ১৩ জুলাই বাদীকে বাড়ি তৈরি করে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু বাদী নির্ধারিত সময়ে বাড়ি বুঝে না পাওয়ায় ডোম-ইনোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর  ও গত বছরের ২৫ অক্টোবর তিন কোটি ২০ লাখ টাকা দাবি করেন।

আসামিরা সে টাকা না দেওয়ায় বাদী বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তী সময়ে আসামিরা ৪৭ লাখ টাকা বাদীকে পরিশোধ করেন। অবশিষ্ট দুই কোটি বায়াত্তর লাখ টাকা পরে পরিশোধ করবেন বলে জানান। আসামিরা বাদীকে যথাসময়ে বাড়ি তৈরি করে না দেওয়ায় ও বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় বাদী ঢাকার মহানগর হাকিমের  আদালতে চলতি বছরের ১৪ মার্চ ‘রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০’-এর ১৯, ২৭ ও ৩০ ধারায় মামলা করেন।

ওই দিনই বিচারক মামলাটি বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদেন্তর নির্দেশ দেন।

সে মোতাবেক বনানী থানার ওসি তদন্ত মো. ওয়াহিদুজ্জামন এ বছরের ২৫ মে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করে মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। আসামিরা সে সমন পেয়ে হাজির না হওয়ায় গত ১০ অক্টোবর আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

 বাদী পক্ষের আইনজীবী মাহমুদ হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ডম-ইনো রিয়েলস্ট্রেট মানুষকে খুব হয়রানি করে। তাদের কাছে টাকার জন্য দিনের পর দিন অফিসে গেলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। তিনি আরও জানান, ডম-ইনোর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া এ মামলার বাদী শামসুদ্দিন ঢাকার জেলা জজ আদালতে একটি আরেবেটিশান মিস মামলা করেছেন। মামলা নম্বর- ৪১/১৬। সে মামলায় ডম-ইনো যেন এ প্রকল্পে কোন ফ্লাট বিক্রি বা হস্তান্তর করতে না পারে, সে মোতাবেক আদালতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

/এসআইটি/এইচকে/