‘একজনকে ফাঁসাতেই’ অস্ট্রেলীয় দূতাবাসকে হুমকি দিয়েছিলেন তৌসিফ

তৌসিফ হোসেন সীমান্তরাজধানী ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসে হুমকি দিয়ে পাঠানো ইমেইলদাতা তৌসিফ হোসেন সীমান্তকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইউনিট। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তৌসিফ জানিয়েছে, ‘একজনকে ফাঁসানোর জন্য সে এ মেইলটি পাঠিয়েছিল।’ শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগে উপ কমিশনার মাসুদুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।  

মাসুদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তৌসিফ জানিয়েছে, নুরুল হক মুন্না নামে একজনের কাছ থেকে সে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা করে দেওয়ার কথা বলে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু ভিসা করতে না পারায় মুন্না তাকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। পরবর্তীতে তোসিফ কৌশলে মুন্নার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার সংগ্রহ করে। পরে মুন্নাকে  বিপদে ফেলার জন্য মোবাইল নাম্বার ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার উল্লেখ করে করে অস্ট্রেলীয় দূতাবাস ও জাগো ফাউন্ডেশনের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।’

মাসুদুর রহমান আরও বলেন, ‘তৌফিক হোসেন একটি ফেসবুক পেইজ খুলে অস্ট্রেলিয়ায় লোক পাঠানোসহ বিভিন্ন প্রতারণামূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে। সে ধানমণ্ডির ‘এইচআইভি’ নামে অন্য একজনের অফিস প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা করে ভাড়া নিয়ে মানুষকে প্রতারিত করে আসছিল।’

 মাসুদুর রহমান বলেন, ‘অস্ট্রেলীয় দূতাবাসে হুমকি একটি প্রতারণামূলক ঘটনা। এটি প্রকৃত কোনও হুমকির ঘটনা নয়। তবে সেখানে নিরাপত্তায় যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

এর আড়ে  তৌসিফ হোসেন সীমান্তকে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বনশ্রী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, মোবাইল ও রাউটার উদ্ধার করা হয়। তৌসিফ একজন ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার। তার বাড়ি টাঙ্গাইল সদরে।

অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসে হুমকি দিয়ে পাঠানো মেইল

প্রসঙ্গত, রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসে হুমকি দিয়ে পাঠানো ইমেইলদাতা তৌসিফ হোসেন সীমান্তকে  অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসকে ইমেইল পাঠিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। তা না হলে দূতাবাসের লোকজনের ক্ষতি এবং বিস্ফোরণ ঘটানো হবে বলেও মেইলে হুমকি দেওয়া হয়।
দূতাবাসে হুমকি দেওয়া মেইলে বলা হয়, ‘উই আর হেয়ার ইন ঢাকা গুলশান, কনফার্মিং ইউ দ্যাট আওয়ার আইজ অন ইওর অ্যাম্বাসেডর। উই ডোন্ট ওয়ান্ট এনি ট্রাবল, জাস্ট গিভ আস ফাইভ লাক বাংলাদেশি টাকা, অ্যাজ সুন অ্যাজ পসিবল। অ্যান্ড উই উইল স্টপ ট্রাবলিং ইওর পিপল, আদারওয়াইজ দেওয়ার উইল বি বিগ ব্লাস্ট ইন ইওর অ্যাম্বেসি অ্যাট ১৮৪ গুলশান এভিনিউ, গুলশান-২। আওয়ার কন্টাক্ট ০১৭১৭৮৭৪৭২৪। আওয়ার অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস, জনতা ব্যাংক গুলশান শাখা, অ্যাকাউন্ট নাম্বার ০০০০০০১০০৩৩৮১। অ্যাকাউন্ট নাম মুন্না এন্টারপ্রাইজ। রিমেম্বার দিস নাম্বার অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট বিলং টু সামওয়ান হু হ্যাভ নো আইডিয়া অ্যাবাউট আস, সো ডোন্ট ট্রাই টু ফাইন্ড আস, জাস্ট কনফার্ম আস আফটার সেন্ডিং দ্য মানি বাই কল অর ইমেইল।’
মেইলে আরবিতেও কিছু লেখা রয়েছে। মেইলটি পাওয়ার পর ঢাকার অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডেভিড জোনস হুমকির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে হুমকিদাতাকে খুঁজে বের করতে মাঠে নামে।
/জেইউ/এনএল/এআর/এসটি/