দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সম্পূরক পেপারবুক সরবরাহের নির্দেশ

৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের পর আদালতে খালেদা জিয়াজিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি করা পেপারবুকের সব নথি সংযুক্ত না থাকায় আইনজীবীদের একটি সম্পূরক পেপারবুক সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী রবিবারের (২২ জুলাই) মধ্যে এই পেপারবুক সরবরাহে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দেন আদালত। সোমবার (১৬ জুলাই) এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানির পর  বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি করা পেপারবুকে অনেক নথি না থাকায় একটি সম্পূরক পেপারবুক চেয়ে আবেদন জানান তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আব্দুর রেজাক খান। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।

শুনানির শুরুতে আদালত দুদকের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, খালেদা জিয়ার আপিলের জন্য যে পেপারবুক তৈরি করা হয়েছে তার মধ্যে কোনও নথির কমতি আছে কিনা? জবাবে দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান পেপারবুকটিতে বেশ কিছু নথি না থাকার বিষয়ে আদালতকে জানান।

পরে আদালত আগামী রবিবারের (২২ জুলাই) মধ্যে একটি সম্পূরক পেপারবুক প্রস্তুত করে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সরবরাহ করতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দেন।

এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আপিল শুনানি করতে বলেন হাইকোর্ট। কিন্তু  আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী আদালতকে বলেন, ‘একটি সম্পূরক পেপারবুক তৈরি করে আমাদের সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’ এ কারণে আপিল শুনানি আগামী রবিবার পর্যন্ত মুলতবি রাখার আবেদন করেন তিনি।

জবাবে আদালত বলেন, এ মামলার আপিল নিষ্পত্তিতে আপিল বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে। আপনাদের আপিল শুনানি শুরু করতে হবে। এ সময় এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, সম্পূরক আপিল হাতে পাওয়া ছাড়া শুনানি সম্ভব নয়।

পরে আদালত তাদের পুনরায় আপিল শুনানি করতে বললে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান আপিলের ওপর শুনানি শুরু করেন।    

 এর আগে গত ১২ জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার খালাশ চেয়ে করা আপিল আবেদনের শুনানির জন্য প্রস্তুত হওয়া পেপারবুকে অনেক তথ্যই নেই বলে আদালতকে জানান  তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। এরপর একই বিষয়ে গত ১৫ জুলাই আংশিক শুনানি নিয়ে আদালত দুদক আইনজীবীকে পেপারবুকে অনেক নথি না থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন।  এই বিষয়ে সোমবার (১৬ জুলাই) আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই দুদক আইনজীবী মামলার পেপারবুকে নথি-পত্র কম থাকা ও কয়েকটি নথি-পত্র ক্রমিক অনুসারে যথাস্থানে না থাকার বিষয়ে আদালতকে জানান। 

প্রসঙ্গত, মামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় নথীপত্র একত্রীকরণকেই মূলত পেপারবুক বলা হয়। একটি পেপারবুকে একটি মামলার প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত, দলিল একসঙ্গে সংযুক্ত থাকে। আর এই পেপারবুক হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা ও অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস মিলে প্রস্তুত করে থাকে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার ক্ষেত্রেও এমন একটি পেপারবুক প্রস্তুত হয়েছে। যেটি প্রায় ১২ হাজার পৃষ্ঠার।

উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। রায় ঘোষণার পরপরই  খালেদা জিয়াকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এখন সেখানেই আছেন।