ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ স্থগিত

রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের মধ্যে চারজনের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে রবিবার (১৭ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন।

আদালতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান। অন্যদিকে আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ ও অনীক আর হক। তাদের সঙ্গে ছিলেন নিয়াজ মোহাম্মদ মাহবুব ও সাহিদা সুলতানা শিলা।

এর আগে গত ১১ জানুয়ারি রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের মধ্যে চারজনের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রত্যেককে ১৫ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

পরে সে আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৭ মে রাতে রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে এসি বিস্ফোরণের আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদের মধ্যে ছিলেন চারজন পুরুষ এবং একজন নারী। পরে একই বছরের ৩০ মে রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে এসি বিস্ফোরণের আগুনে পাঁচ জনের মৃত্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিটটি দায়ের করেন আইনজীবী নিয়াজ মাহমুদ।

ওই রিটের শুনানির পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের আইজি, ফায়ার ব্রিগেড কর্তৃপক্ষ ও রাজউকের কাছে পৃথক পৃথক রিপোর্ট চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে আদালতে দাখিল করা তিনটি প্রতিবেদনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার তথ্য উঠে আসে।

এরপর ২০২০ সালের ১৫ জুলাই রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের চার পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে ওই অগ্নিকাণ্ডে নিহত মনিরুজ্জামানের পরিবার আদালতের বাইরে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করে নেওয়ায় সে বিষয়ে কোনও আদেশ দেননি হাইকোর্ট। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সে আপিলের শুনানি নিয়ে আদালত এ মামলায় হাইকোর্টকে রুল জারির পাশাপাশি শুনানির নির্দেশনা দেন। ওই নির্দেশের ধারাবাহিকতায় মামলাটি পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ক্ষতিগ্রস্ত চার পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রত্যেককে ১৫ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।