বাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: দুই পরিবহন শ্রমিককে জামিন দেননি হাইকোর্ট

গাজীপুরে চলন্ত বাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় দুই পরিবহন শ্রমিককে জামিন দেননি হাইকোর্ট। মামলার আসামি বাস কন্ডাক্টর ইশিবপুর এলাকার অমিত শীল (২২) ও হেলপার ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ঠাকুরবাহাই এলাকার মোজাম্মেল (২৩) এই জামিন আবেদন করে।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হাবিবুর রহমান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. বশির উল্লাহ।

এর আগে ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরে চলন্ত বাসে এক নারীকে (৩৫) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে চালকসহ তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গাজীপুর মহানগরীর ঢাকা বাইপাস সড়কের ভোগড়া গরুকাটা ব্রিজের কাছে (পেয়ারা বাগান) এই ঘটনা ঘটে বলে জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানার পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর, তদন্ত) নন্দলাল চৌধুরী।

গ্রেফতার চার ব্যক্তি হলো- বাসচালক শেরপুরের নকলা উপজেলার ধনাকুশ গ্রামের আমীর হোসেন (২৭), বাসের কন্ডাক্টর অমিত শীল ও হেলপার মোজাম্মেল।

পুলিশ জানায়, ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুর সদর উপজেলার মেম্বার বাড়ি এলাকায় ভুক্তভোগী এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ইছামতি পরিবহনের বাসে টঙ্গী ফিরছিলেন। বাসটি মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তায় পৌঁছালে চার বা পাঁচ জন নারী যাত্রীকে রেখে বাসচালক ও সহকারীরা বাস থেকে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেন। এরপর ভোগড়া বাইপাস মোড় যাওয়ার পর দুই জন নারী ছাড়া বাস থেকে অন্য যাত্রীদেরও নামিয়ে দেন চালকের সহকারীরা। পরে ওই দুই নারী বাস থেকে নামার চেষ্টা করলেও চালকের সহযোগীরা তাদের আটকে রাখেন। রাত পৌনে ১২টার দিকে বাসটি ভোগড়া এলাকার গরুকাটা ব্রিজের কাছে পৌঁছালে বাসের দরজা বন্ধ করে দেন তারা। এই সময় ওই দুই নারী চিৎকার দিলে তাদের হত্যার ভয় দেখিয়ে বাসের পেছনে নিয়ে বেঁধে রাখেন চালক ও তার সহযোগীরা। রাত ১২টার দিকে তারা এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরদিন ভোরে ওই তিন ব্যক্তি বাস থেকে নেমে পালিয়ে যান। পরে দুই নারীর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাসটি জব্দ করে।

ইনস্পেক্টর নন্দলাল চৌধুরী বলেন, ‘এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাসন থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই দিনই মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযুক্ত তিন জনকে গ্রেফতার করে। পরে আটককৃতরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গাজীপুর আদালতে জবানবন্দি দেয়।’