সঠিক সময়ের বৃষ্টি আল্লাহর এক বিরাট নেয়ামত। আমাদের দেশের মানুষ এখন বৃষ্টিশূন্য প্রচণ্ড খরায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এই মুহূর্তে এক পশলা রহমতের বৃষ্টি তাদের দিতে পারে মনভরা তৃপ্তি। বৃষ্টি যে মহান আল্লাহর বিরাট অনুগ্রহ পবিত্র কোরআনে তা উল্লেখ রয়েছে এভাবে- ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ থেকে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে তোমাদের জীবিকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফলমূল উৎপন্ন করেন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৩২)
একইসাথে অনেক সময় বৃষ্টি আল্লাহর গজব হিসেবেও বর্ষিত হয়। যেমন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি তাদের ওপর বর্ষণ করেছিলাম ‘বৃষ্টি’। সুতরাং দেখ, অপরাধীদের পরিণতি কিরূপ ছিল।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৮৪)
পবিত্র কোরআনে নানা প্রেক্ষাপটে এভাবে বৃষ্টির নানারূপ বর্ণনা এসেছে। বৃষ্টির আরবি প্রতিশব্দ ‘আল মাতর’। পাশাপাশি ‘আল গাইছ’, ‘আল ওয়াদক্ব’, ‘আল মা’, ‘আস সামা’, ‘আত তিল্লু’ ও ‘আল ওয়াবিল’- শব্দগুলো দিয়েও পবিত্র কোরআনে বৃষ্টির বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। বৃষ্টি সম্পর্কিত সেই আয়াতগুলোর বাংলা অনুবাদ তুলে ধরা হলো-
১। ‘আর যদি বৃষ্টির কারণে তোমাদের কোনও কষ্ট হয় অথবা তোমরা অসুস্থ হও, তাহলে অস্ত্র রেখে দেওয়াতে তোমাদের কোনও দোষ নেই। আর তোমরা তোমাদের সতর্কতা অবলম্বন করবে। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করেছেন লাঞ্ছনাদায়ক আজাব।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১০২)
২। ‘আর স্মরণ করো, যখন তারা বলেছিল, হে আল্লাহ, যদি এটি সত্য হয় আপনার পক্ষ থেকে, তাহলে আমাদের ওপর আকাশ থেকে পাথরের বৃষ্টি বর্ষণ করুন অথবা আমাদের ওপর অন্য কোনও যন্ত্রণাদায়ক আজাব নিয়ে আসুন’। (সুরা আনফাল, আয়াত : ৩২)
৩। ‘অতঃপর যখন আমার আদেশ এসে গেলো, তখন আমি জনপদের ওপরকে নিচে উল্টে দিলাম এবং ক্রমাগত পোড়ামাটির পাথরের বৃষ্টি বর্ষণ করলাম।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৮২)
৪। ‘আমি তাদের ওপর মুষলধারে (পাথরের) বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম। ভীতি প্রদর্শিতদের জন্য কতই না নিকৃষ্ট ছিল এই বৃষ্টি!’ (সুরা নামল, আয়াত : ৫৮)
৫। ‘আর অবশ্যই তারা সে জনপদ দিয়ে অতিক্রম করেছে, যাতে অকল্যাণের বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছিল। তবে কি তারা তা দেখেনি? বরং তারা পুনরুত্থানের প্রত্যাশা করতো না।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত : ৪০)
৬। ‘আর আমি তাদের ওপর শিলাবৃষ্টি বর্ষণ করলাম। সুতরাং সেই বৃষ্টি ভয় প্রদর্শিতদের জন্য কতই না মন্দ ছিল!’ সুরা শুয়ারা, আয়াত : ১৭৩)
৭। ‘অতঃপর তারা যখন তাদের উপত্যকার দিকে মেঘ আসতে দেখলো, তখন তারা বললো- এ তো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দেবে। না, তা হলো সেই জিনিস তোমরা যা তাড়াতাড়ি নিয়ে আসতে চেয়েছিলে। এ হলো ঝড়, যাতে আছে ভয়াবহ আজাব।’ (সুরা আহকাফ, আয়াত : ২৪)
৮। ‘কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছেই আছে, তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন, জরায়ুতে কী আছে তা তিনিই জানেন।’ (সুরা লুকমান, আয়াত : ৩৪)
৯। ‘আর তারা নিরাশ হয়ে পড়লে তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তাঁর রহমত ছড়িয়ে দেন। আর তিনিই তো অভিভাবক, প্রশংসিত।’ (সুরা শুরা, আয়াত ২৮)
১০। ‘তোমরা জেনে রাখো যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র। এর উপমা হলো বৃষ্টির মতো, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদেরকে আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়।’ (সুরা হাদিদ, আয়াত : ২০)
১১। ‘...যদি তারা পানি চায়, তবে তাদেরকে দেওয়া হবে এমন পানি যা গলিত ধাতুর মতো, যা চেহারাগুলো ঝলসে দেবে। কী নিকৃষ্ট পানীয়! আর কী মন্দ বিশ্রামস্থল!’ (সুরা কাহফ, আয়াত : ২৯)
১২। ‘আর এখানে স্থাপন করেছি সুদৃঢ় ও সুউচ্চ পর্বত এবং তোমাদেরকে পান করিয়েছি সুপেয় পানি।’ (সুরা মুরসালাত, আয়াত : ২৭)
১৩। ‘আর আমি আসমান থেকে বরকতময় পানি নাজিল করেছি। অতঃপর তা দ্বারা আমি উৎপন্ন করি বাগ-বাগিচা ও কর্তনযোগ্য শস্যদানা।’ (সুরা ক্বফ, আয়াত : ৯)
১৪। ‘এবং তিনিই (সেই সত্তা), যিনি নিজ রহমতের (অর্থাৎ বৃষ্টির) পূর্বক্ষণে (বৃষ্টির) সুসংবাদবাহীরূপে বায়ু প্রেরণ করেন। যখন তা ভারী মেঘমালাকে বয়ে নিয়ে যায়, তখন আমি তাকে কোনও মৃত ভূখণ্ডের দিকে চালিয়ে নিয়ে যাই, তারপর সেখানে পানি বর্ষণ করি এবং তা দ্বারা সর্বপ্রকার ফল উৎপন্ন করি। এভাবেই আমি মৃতদেরকেও জীবিত করে তুলবো। হয়তো (এসব বিষয়ে চিন্তা করে) তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত : ৫৭)
১৫। ‘আর তিনিই তাঁর রহমতের প্রাক্কালে সুসংবাদ স্বরূপ বায়ু পাঠিয়েছেন এবং আমি আকাশ থেকে পবিত্র পানি বর্ষণ করেছি।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত : ৪৮)
১৬। ‘তোমরা যে পানি পান করো সে ব্যাপারে আমাকে বলো। বৃষ্টিভরা মেঘ থেকে তোমরা কি তা বর্ষণ করো, না আমি বৃষ্টি বর্ষণকারী?’ (সুরা ওয়াকিয়াহ, আয়াত : ৬৮-৬৯)
১৭। ‘বরং তিনি (শ্রেষ্ঠ), যিনি আসমানগুলো ও জমিনকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য তিনি আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর তা দ্বারা আমি মনোরম উদ্যান সৃষ্টি করি। তার বৃক্ষাদি উৎপন্ন করার ক্ষমতা তোমাদের নেই...।’ (সুরা নামল, আয়াত : ৬০)
১৮। ‘হে আমার কওম, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও অতঃপর তার কাছে তাওবা করো, তাহলে তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি পাঠাবেন এবং তোমাদের শক্তির সাথে আরও শক্তি বৃদ্ধি করবেন। আর তোমরা অপরাধী হয়ে বিমুখ হয়ো না...।’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৫২)
১৯। ‘আর আমি বায়ুকে উর্বরকারীরূপে প্রেরণ করি। অতঃপর আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তা তোমাদের পান করাই। তবে তোমরা তার সংরক্ষণকারী নও।’ (সুরা হিজর, আয়াত : ২২)
২০। ‘আর তিনিই আসমান থেকে বর্ষণ করেছেন বৃষ্টি। অতঃপর আমি এ দ্বারা উৎপন্ন করেছি সব জাতের উদ্ভিদ। অতঃপর আমি তা থেকে বের করেছি সবুজ ডাল-পালা। আমি তা থেকে বের করি ঘন সন্নিবিষ্ট শস্যদানা। আর খেজুর বৃক্ষের মাথি থেকে (বের করি) ঝুলন্ত থোকা। আর (উৎপন্ন করি) আঙ্গুরের বাগান এবং সাদৃশ্যপূর্ণ ও সাদৃশ্যহীন জয়তুন ও আনার। দেখো তার ফলের দিকে, যখন সে ফলবান হয় এবং তার পাকার প্রতি। নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য যারা ঈমান আনে।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ৯৯)
২১। ‘তুমি কি দেখ না, আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর জমিনে তা প্রস্রবণ হিসেবে প্রবাহিত করেন তারপর তা দিয়ে নানা বর্ণের ফসল উৎপন্ন করেন, তারপর তা শুকিয়ে যায়। ফলে তোমরা তা দেখতে পাও হলুদ বর্ণের তারপর তিনি তা খড়-কুটায় পরিণত করেন। এতে অবশ্যই উপদেশ রয়েছে বুদ্ধিমানদের জন্য।’ (সুরা জুমার, আয়াত : ২১)
২২। ‘তিনিই তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান এবং আকাশ থেকে তোমাদের জন্য রিজিক (বৃষ্টি) পাঠান। আর যে আল্লাহ অভিমুখী সেই কেবল উপদেশ গ্রহণ করে থাকে।’ (সুরা গাফির, আয়াত : ১৩)
২৩। ‘আর যিনি আসমান থেকে পরিমিতভাবে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর আমি তা দ্বারা মৃত জনপদকে সঞ্জীবিত করি। এভাবেই তোমাদেরকে বের করা হবে।’ (সুরা জুখরুফ, আয়াত : ১১)
২৪। ‘রাত ও দিনের আবর্তনে, আর আল্লাহ আকাশ থেকে যে বৃষ্টি বর্ষণ করেন তা দিয়ে জমিনকে তার মৃত্যুর পর আবার জীবিত করেন আর বায়ুর পরিবর্তনে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা জাসিয়া, আয়াত : ৫)
২৫। ‘তিনিই সে সত্তা, যিনি আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন, যাতে রয়েছে তোমাদের জন্য পানীয় এবং তা থেকে হয় উদ্ভূত, যাতে তোমরা জন্তু চরাও।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ১০)
২৬। ‘আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তার দ্বারা জমিনকে তার মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করেন। এতে ওই সম্প্রদায়ের জন্য বহু নিদর্শন আছে যারা লক্ষ্য করে শোনে।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৬৫)
২৭। ‘তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।’ (সুরা নুহ, আয়াত : ১১)
২৮। ‘আল্লাহ, যিনি আসমানগুলো ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন ফলে তা দ্বারা ফল-ফলাদি থেকে তোমাদের জন্য রিজিক উৎপাদন করেন...।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৩২)
২৯। ‘আর আমি আকাশ থেকে পরিমিতভাবে পানি বর্ষণ করেছি। অতঃপর আমি তা জমিনে সংরক্ষণ করেছি। আর অবশ্যই আমি সেটাকে অপসারণ করতেও সক্ষম।’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ১৮)
৩০। ‘আর আমি মেঘমালা থেকে প্রচুর পানি বর্ষণ করেছি।’ (সুরা নাবা, আয়াত : ১৪)
৩১। ‘তাঁর নিদর্শনের মধ্যে হলো এই যে, তিনি তোমাদেরকে বিজলি দেখান ভীতি ও ভরসা সঞ্চারীরূপে, আর তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন যা দিয়ে জমিনকে তার মৃত্যুর পর আবার জীবিত করেন, জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের জন্য অবশ্যই এতে বহু নিদর্শন আছে।’ (সুরা রুম, আয়াত : ২৪)
৩২। ‘আল্লাহ, যিনি বাতাস প্রেরণ করেন ফলে তা মেঘমালাকে ধাওয়া করে; অতঃপর তিনি মেঘমালাকে যেমন ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তাকে খণ্ড-বিখণ্ড করে দেন, ফলে তুমি দেখতে পাও, তার মধ্য থেকে নির্গত হয় বারিধারা। অতঃপর যখন তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের ওপর ইচ্ছা বারি বর্ষণ করেন, তখন তারা হয় আনন্দিত।’ (সুরা রুম, আয়াত : ৪৮)
৩৩। ‘আর তুমি যদি তাদেরকে প্রশ্ন করো, কে আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর তা দ্বারা জমিনকে তার মৃত্যুর পর সঞ্জীবিত করেন? তবে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। বলো, সকল প্রশংসা আল্লাহর। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা বোঝে না।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৬৩)
৩৪। ‘যিনি তোমাদের জন্য জমিনকে করেছেন বিছানা, আসমানকে ছাদ এবং আসমান থেকে নাজিল করেছেন বৃষ্টি। অতঃপর তার মাধ্যমে উৎপন্ন করেছেন ফল-ফলাদি, তোমাদের জন্য রিজিক স্বরূপ। সুতরাং তোমরা জেনে-বুঝে আল্লাহর জন্য সমকক্ষ নির্ধারণ করো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২২)
৩৫। ‘নিশ্চয়ই আকাশগুলো ও পৃথিবীর সৃষ্টির মধ্যে, রাত ও দিনের বিবর্তনের মধ্যে, লোকের উপকারী দ্রব্যাদিসহ সমুদ্রে চলাচলকারী জলযানের মধ্যে এবং আকাশ থেকে আল্লাহর বর্ষিত সেই পানির মধ্যে যা দ্বারা তিনি পৃথিবীকে মরে যাওয়ার পর আবার জীবিত করেন এবং তাতে সকল প্রকার জীব-জন্তুর বিস্তরণে এবং বাতাসের গতি পরিবর্তনের মধ্যে এবং আকাশ ও ভূমণ্ডলের মধ্যস্থলে নিয়ন্ত্রিত মেঘপুঞ্জের মধ্যে বিবেকসম্পন্ন লোকেদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৬৪)
৩৬। ‘স্মরণ করো, যখন তিনি তোমাদেরকে তন্দ্রায় আচ্ছন্ন করেন তাঁর পক্ষ থেকে নিরাপত্তাস্বরূপ এবং আকাশ থেকে তোমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করেন, আর যাতে এর মাধ্যমে তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করেন, আর তোমাদের থেকে শয়তানের কুমন্ত্রণা দূর করেন, তোমাদের অন্তরসমূহ দৃঢ় রাখেন এবং এর মাধ্যমে তোমাদের পা-গুলো স্থির রাখেন।’ (সুরা আনফাল, আয়াত : ১১)
৩৭। ‘তিনিই ভয় ও আশা সঞ্চার করার জন্য তোমাদেরকে বিজলি দেখান এবং তিনি ভারী মেঘমালা সৃষ্টি করেন।’ (সুরা রাদ, আয়াত : ১২)
৩৮। ‘তিনি আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন যার ফলে উপত্যকাগুলো পরিমিতভাবে প্লাবিত হয়, প্লাবনে উপরিভাগে ফেনা জমে উঠে, আর এ রকম ফেনা জমে উঠে যখন অলঙ্কার ও তৈজসপত্র বানানোর জন্য সেগুলো আগুনে গলানো হয়। এভাবে আল্লাহ প্রকৃত সত্য ও মিথ্যার দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে থাকেন। ফেনা খড়কুটোর মতো উড়ে যায়, আর যা মানুষের জন্য উপকারী তা জমিনে স্থিতিশীল হয়। এভাবে আল্লাহ দৃষ্টান্ত দিয়ে (মানুষকে বুঝিয়ে) থাকেন।’ (সুরা রাদ, আয়াত : ১৭)
৩৯। ‘তুমি কি দেখোনি যে, আল্লাহ মেঘমালাকে পরিচালিত করেন, তারপর তিনি সেগুলোকে একত্রে জুড়ে দেন, তারপর সেগুলো স্তূপীকৃত করেন, তারপর তুমি দেখতে পাও তার মধ্য থেকে বৃষ্টির বের হয়। আর তিনি আকাশে স্থিত মেঘমালার পাহাড় থেকে শিলা বর্ষণ করেন। তারপর তা দ্বারা যাকে ইচ্ছা আঘাত করেন। আর যার কাছ থেকে ইচ্ছা তা সরিয়ে দেন। এর বিদ্যুতের ঝলক দৃষ্টিশক্তি প্রায় কেড়ে নেয়।’ (সুরা নুর, আয়াত : ৪৩)
৪০। ‘...অতএব তার উপমা এমন একটি মসৃণ পাথর, যার ওপর রয়েছে মাটি। অতঃপর তাতে প্রবল বৃষ্টি পড়লো, ফলে তাকে একেবারে পরিষ্কার করে ফেললো। তারা যা অর্জন করেছে তার মাধ্যমে তারা কোনও কিছু করার ক্ষমতা রাখে না। আর আল্লাহ কাফের জাতিকে হিদায়াত দেন না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৬৪)
৪১। ‘আর যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও নিজদেরকে সুদৃঢ় রাখার লক্ষ্যে সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা উঁচু ভূমিতে অবস্থিত বাগানের মতো, যাতে পড়েছে প্রবল বৃষ্টি। ফলে তা দ্বিগুণ ফল-ফলাদি উৎপন্ন করেছে। আর যদি তাতে প্রবল বৃষ্টি নাও পড়ে, তবে হালকা বৃষ্টি (যথেষ্ট)। আর আল্লাহ তোমরা যা আমল করো, সে ব্যাপারে সম্যক দ্রষ্টা।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৬৫)
লেখক: গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক, মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ, ঢাকা।