রোগী সেজে গাড়ি ছিনতাই

রোগী সেজে তারা ছিনতাই করেছিল গাড়িটি। দু’দিন পর মালিক গাড়িটি ফেরত পেলেও ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশি তৎপরতায় গাড়ি রেখেই পালিয়ে যায় ছিনতাইকারী চক্র।

রবিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রূপনগর থানা পুলিশ ও জাতীয় জরুরি সেবার কর্মকর্তারা বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘৯৯৯ নম্বরে এক কলারের ফোন কলে ময়মনসিংহ থেকে ছিনতাই হওয়া ব্যক্তিগত গাড়িটি উদ্ধার করেছে ঢাকার রূপনগর থানার পুলিশ।’

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, শুক্রবার (৯ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০টায় ৯৯৯ নম্বরে আনোয়ার হোসেন নামে একজন কলার গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা থেকে ফোন করে জানান, তার ঢাকা মেট্রো গ ৩১-০১১৬ নম্বরের সাদা রঙের টয়োটা প্রিমিও ব্যক্তিগত গাড়িটি তার ছেলে ভাড়ায় চালান। বিকালে একজন মুমূর্ষু রোগী ও তার দুই জন আত্মীয়সহ তিন জন যাত্রীকে নিয়ে তার ছেলে মাওনা থেকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের উদ্দেশে ভাড়ায় রওনা দিয়েছিল। কিন্তু ময়মনসিংহ মেডিক্যালে পৌঁছার পর গাড়ির যাত্রীরা জানান, তাদের রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ঢাকা মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে। তখন তার ছেলে ওই তিন জনকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। পথে ময়মনসিংহের ভালুকার হাজিপাড়ার বাইপাসের কাছে রোগী সেজে থাকা যাত্রী ও তার সহযোগীরা তার ছেলেকে গাড়ি থামাতে বাধ্য করে। এরপর তার ছেলেকে মারধর করে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে হাত-পা বেঁধে রাস্তার পাশে নির্জন স্থানে ফেলে রেখে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে এক পথচারী তার ছেলেকে খুঁজে পায় এবং পথচারীর ফোন থেকে তাকে ফোন করে ঘটনা জানালে তিনি ৯৯৯-এ ফোন করেন।

আনোয়ার সাত্তার বলেন, ‘৯৯৯ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ময়মনসিংহের ভালুকা থানা এবং ময়মনসিংহ পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ঘটনা জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়। সংবাদ পেয়ে ময়মনসিংহের বিভিন্ন থানার পুলিশ তৎপর হয়, কিন্তু গাড়িটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে শনিবার (১০ এপ্রিল) সকালে কলার তার গাড়িতে স্থাপিত জিপিএস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে গাড়ির লোকেশন জানতে পেরে ৯৯৯-কে জানান, গাড়িটি এরইমধ্যে ঢাকায় প্রবেশ করেছে এবং মিরপুর রূপনগর এলাকায় ঘোরাঘুরি করছে। ৯৯৯ থেকে সংবাদ পেয়ে রূপনগর থানার একটি দল কলারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তার দেওয়া লোকেশন অনুযায়ী গাড়িটি খুঁজতে থাকে। কিন্তু চতুর ছিনতাইকারীরা ক্রমাগত তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছিল। পুলিশও তাকে অনুসরণ করতে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে রূপনগর থানার এসআই  মাসুদ ৯৯৯-কে ফোনে জানান, মিরপুর শাহ আলীবাগ এলাকার বটতলার একটি সরু গলির পাশে পার্ক করা পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের তৎপরতা টের পেয়ে অপরাধীরা গাড়িটি ফেলে পালিয়ে গেছে। স্থানটি মিরপুর থানা এলাকায় হওয়ায় উদ্ধারকৃত গাড়িটি মিরপুর থানায় হস্তান্তর করে তাদের মাধ্যমে মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

রবিবার (১১ এপ্রিল) সকালে ৯৯৯ থেকে গাড়ির মালিক কলারকে ফোন করা হলে তিনি জানান, গাড়িটি তিনি বুঝে পেয়েছেন।

তিনি তার ছিনতাই হওয়া গাড়ি উদ্ধারের তৎপরতা সমন্বয় করার জন্য ৯৯৯-কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।