সাংবাদিক আরিফকে নির্যাতন

সেই আরডিসি নাজিমের সম্পদের হিসাব চেয়ে দুদকের চিঠি

বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে মধ্যরাতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দিয়ে আলোচনায় আসা সেই আরডিসি নাজিমের সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই চিঠি পাঠানো হয়। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) আরিফ সাদিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদক সূত্র জানায়, সাবেক রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি), কুড়িগ্রাম; বর্তমানে-জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (সাময়িক বরখাস্ত) নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ধারা ২৬ (১)-এর ক্ষমতাবলে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে দুদক।

দুদকের পাঠানো চিঠিতে নাজিম উদ্দিনকে নিজের, তার স্ত্রী’র এবং তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের নামে ও বেনামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস এবং তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী এই আদেশ প্রাপ্তির ২১ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশন বরাবর দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

আদেশে আরও বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি তিনি উক্ত সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে ব্যর্থ হন অথবা মিথ্যা বিবরণী দাখিল করেন, তাহলে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ধারা ২৬(২) মোতাবেক তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কমিশন।

সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত সাংবাদিক আরিফকে নির্যাতনের ঘটনা প্রসঙ্গে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ওই ঘটনায় কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনের বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) আগামী দুই বছরের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ ঘটনায় জড়িত রাহাতুল ইসলামের ইনক্রিমেন্ট স্থগিত করা হয়েছে আগামী তিন বছরের জন্য। আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমাকে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) এ সিদ্ধান্তে সম্মতিও দিয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষায় এ সংক্রান্ত নথি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রয়েছে বলে জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।

গত বছরের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামের বাড়িতে ঢুকে তাকে ধরে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়। তার বাড়িতে আধা বোতল মদ এবং গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ আনা হয়। এভাবে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে একজন সাংবাদিককে ধরে এনে সাজা দেওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। গণমাধ্যমে এ ঘটনা ফলাও করে প্রচার হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় পরদিন ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। তার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন ও সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।

আরও পড়ুন...

সাংবাদিক আরিফকে নির্যাতন: ডিসি সুলতানার শাস্তি কেবল ইনক্রিমেন্ট স্থগিত!